কলকাতা: এটিএম প্রতারণাকাণ্ডের তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। এর মধ্যে ২ জনকে কলকাতা থেকে এবং বাকি ২ জনকে গুজরাত থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  গুজরাত থেকে ধৃতদের এরাজ্যে আনতে ইতিমধ্যেই ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। 


সুরাত থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে দিল্লির দুই বাসিন্দাকে। ধৃতদের নাম,  মনোজ গুপ্তা এবং নবীন গুপ্তা। অন্যদিকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে,  বিশ্বদীপ রাউত এবং আব্দুল সইফুল মণ্ডলকে।


এটিএম যন্ত্র বসিয়ে প্রতারণার ঘটনার তদন্তে নেমে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সূত্রে ধরে শুরু হয় তদন্ত। 


পুলিশ সূত্রে খবর,  হাতে আসা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তা থেকে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করা হয়। তাঁরা কী ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করছে, তা দেখা হয়। 


প্রথমে কলকাতা থেকে ২ জনকে পাকড়াও করা হয়। ধৃতদের জেরা করে গুজরাতে বাকি ২ জনের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। 


গ্যাংটি ভিন রাজ্যের বলে অনুমান করে কলকাতা পুলিশ। গত পরশু ভিনরাজ্যে যায় পুলিশের ৩টি দল। তিনটি দল যায় দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানায়। 


সম্প্রতি হরিয়ানার ফরিদাবাদে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে গ্রেফতার হওয়া এক দুষ্কৃতীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার  লক্ষ্যে ফরিদাবাদে যায় একটি দল। 


পাশাপাশি, শহরের এটিএমগুলি পরীক্ষা করেন ফরেন্সিক আধিকারিকরা। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে এটিএম খুলে বিশেষ যন্ত্র লাগানো হচ্ছে। 


তার ফলে এটিএম-এর নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে প্রতারকদের হাতে। তুলে নেওয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এটাই হল ‘ম্যান ইন দ্য মিডল অ্যাটাক’ পদ্ধতি। 


গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এটিএমের লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা ল্যান কেবিলের সঙ্গে বিশেষ ডিভাইস যা যন্ত্র বসিয়ে দিচ্ছে প্রতারকরা। 


এরপর মাস্টার কি দিয়ে এটিএমের ডিসপ্লে-র ওপরের হুড খুলে লোপাট করা হচ্ছে টাকা। ডিভাইস ইনস্টলের ফলে, ব্যাঙ্কের বিশেষ সফটঅয়্যার অকেজো হয়ে যাচ্ছে। ফলে এটিএম থেকে টাকা লোপাট করলেও ব্যাঙ্কের কাছে কোনও তথ্য পৌঁছচ্ছে না।


পুলিশ সূত্রে খবর,  ১২ থেকে ২২মে-র মধ্যে মাত্র ১১ দিনের মধ্যে কলকাতার ৭টি থানা এলাকার ১০টি এটিএম থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছে ২ কোটি টাকারও বেশি।


পুলিশ সূত্রে খবর, জানুয়ারি মাসে এটিএম প্রতারণার অভিযোগে খড়দা থেকে হরিয়ানার বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর সঙ্গে এই সব ঘটনার কোনও যোগ আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


তদন্তকারীদের দাবি, এই জালিয়াতিতে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ক্ষতি হচ্ছে না। ব্যাঙ্কেরও না। কিন্তু থার্ড পার্টি - যারা ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা ভরার দায়িত্বে থাকে, ক্ষতি হচ্ছে তাদের।