কলকাতা:  এসএসকেএম-এ ভর্তি করা হল সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। আজ সকালেই পরীক্ষার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রাজ্যের মন্ত্রীকে। তিনি রয়েছেন উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০২ নম্বর কেবিনে।


এর আগে, গতকাল রাতেও একবার তাঁকে আনা হয়েছিল এসএসকেএমে। কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায় কোনও পরীক্ষা না করিয়ে জেলে ফিরে যান।  পরে সকালে তাঁকে আবার হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়।


ভর্তির সময় তাঁর পাশে ছিলেন স্ত্রী। মন্ত্রীর আইনজীবী বলেন, ওঁর বয়স ৭৬ বছর। অনেক ওষুধ খেতে হয়। স্ত্রী সেগুলি দেন। ওনার ওষুধ চিনতে অসুবিধে হয়। তিনি যোগ করেন, সোমবার ঠিকমতো সেই ওষুধ খাওয়া হয়নি মন্ত্রীর।


গতকাল রাতেই  শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ব্লকে ভর্তি হন মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। 


গতকাল হাইকোর্ট তাঁদের জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়, এই চারজনকেই প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। 


সেখানে অসুস্থ বোধ করায় ভোররাতে, পৌনে চারটের সময় মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। 


মদন মিত্রের অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় তাঁকে অক্সিজেন দিতে হয়।  শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও শ্বাসকষ্টের কারণে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয়েছে বলে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর। 


শোভনের অসুস্থতা সম্পর্কে তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাতে এসএসকেএম-এ শুধু চা বিস্কুট খেয়েছেন প্রাক্তন মেয়র।  তার আগে দীর্ঘ সময় সিবিআই দফতরে তাকার সময় তিনি কিছু খাননি। তাই নিতে পারেননি ইনস্যুলিনও।  


বৈশাখী জানান, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সিওপিডি-র সমস্যা আছে।  তাই শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে অক্সিজেন দিতে হয়।  আজ সকালে তিনি প্রাতঃরাশ করেননি।  


মদন মিত্র রয়েছেন এসএসকেএমের উডবার্ন ব্লকের ১০৩ নম্বর কেবিনে। শোভন চট্টোপাধ্যায় ১০৬ নম্বর কেবিনে রয়েছেন।  এখন প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। 


সোমবার সাত সকালে, বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গিয়ে রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক প্রাক্তন মন্ত্রী ও এক বিধায়ককে গ্রেফতার করে সিবিআই। 


দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই অতর্কিতে রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক প্রাক্তন মন্ত্রী ও এক বিধায়কের বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী।  তাঁদের গাড়িতে তোলে সিবিআই।  তারপর নিজাম প্যালেসে নিয়ে গিয়ে, আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার করা হয়।


প্রতিবাদে সরাসরি নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন সিবিআইকে। বলেন, আমাকেও গ্রেফতার করো। প্রায় ৬ ঘণ্টা ঠায় বসে থাকেন সিবিআই অফিসে। 


এতকিছুর পর, সন্ধেয় বিশেষ সিবিআই আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে, জামিন মঞ্জুর হয় চার নেতারই। এরপর সন্ধেয় ৪ নেতাকেই জামিন দেয় বিশেষ সিবিআই আদালত। 


নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাতেই হাইকোর্টে যায় সিবিআই। নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।