কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: আর জি কর-কাণ্ডে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের নিশানা করতে গিয়ে, দলেরই একাংশের সমালোচনা করলেন সৌগত রায়। একদিকে যেমন - ডাক্তারদের আন্দোলনের ভবিষ্য়ৎ নেই বলে কটাক্ষ করলেন, তেমনি নিজের দলের একাংশের প্রতি বললেন - দায়বদ্ধতা না থাকার জন্যই, লোকে পদ পেতে উদ্যোগী হয়।


তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ  সৌগত রায় বলেন, 'আন্দোলনের আজ ভবিষ্যৎ নেই। আন্দোলন সেদিনই কানাগলিতে ঢুকে পড়েছে, যেদিন ওরা আমরণ অনশনের ডাক দিল। এতদিন ক্ষমতায় থেকে আমাদের লোকরা পৌরসভা পঞ্চায়েতের দায়িত্বে ঢুকে গেছে। অ্যাবসোলুট পাওয়ার করাপ্ট।' আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সমালোচনা করতে গিয়ে কার্যত তৃণমূলের একাংশকেই নিশানা করলেন দলের চার বারের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। প্রশ্ন তুললেন তাঁদের দায়বদ্ধতা নিয়ে, লড়াই-সংগ্রামের ইচ্ছা-মানসিকতা নিয়ে! 


 সৌগত রায় বলেন,' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটাটাই আন্দোলনের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে। আন্দোলনটা যখন থাকে না, সেই কমিটমেন্টটা  কমে যায়। তখন পোস্ট, পজিশনের জন্য পয়েশচারিং করে। সেটাই হয়েছে। যারা পঞ্চায়েত দখল করেছে, তাদের কমিটমেন্ট অন্যদের তুলনায় কম। তারা সরাসরি আন্দোলন করেনি! ' বিরোধীরা যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সরব তখন, ইঙ্গিতপূর্ণভাবে সৌগত রায় টেনে আনলেন দুর্নীতির সঙ্গে ক্ষমতার নিবিড় সম্পর্ক প্রসঙ্গে উনিশ শতকের শেষার্ধে ইংল্যান্ডের বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ও নীতিবিশেষজ্ঞ লর্ড অ্যাক্টনের সেই বিখ্য়াত উক্তি 'ক্ষমতার প্রবণতাই দুর্নীতির দিকে ধাবিত হওয়া। একচ্ছত্র ক্ষমতা একচ্ছত্র দুর্নীতির জন্ম দেয়।' 
 
সৌগত রায় আরও বলেন,শহরের একটা অংশ আমাদের বিরুদ্ধে ভোট দেয়! তারাই রাস্তায় নেমেছিল।কারোর হয়তো স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে অভিযোগ ছিল। কারোর তোলাবাজি নিয়ে অভিযোগ ছিল। এই সবটা অভয়াকে কেন্দ্র করে এক জায়গায় চলে এসেছিল। যারা বামপন্থী তাদের একটা ইডিওলজিক্যাল কমিটমেন্ট আছে। কিন্তু এতদিন ক্ষমতায় থেকে আমাদের লোকরা পৌরসভা পঞ্চায়েতের দায়িত্বে ঢুকে গেছে। অ্যাবসেলিউট পাওয়ার কোরাপ্ট। 


আরও পড়ুন, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও বেশি দামে বিক্রির লোভ ! ধুলাগড়ে ২৫৪ বস্তা নিষিদ্ধ চিনা রসুন বাজেয়াপ্ত


গায়ক কেকের মৃত্য়ুর পর বরানগরে এক কর্মসূচিতে সৌগত রায় বলেছিলেন,কলেজ ফেস্টে এত টাকা আসে কোথা থেকে, নিশ্চয় কারও কাছে ‘সারেন্ডার’ করতে হয়! এবার ফের একবার দুর্নীতি-দায়বদ্ধতা নিয়ে সরব হলেন। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কি তাঁর কথা শোনে না কি গোটাটাই রাজনৈতিক কৌশল?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।