কলকাতা: করোনা রিপোর্ট পজিটিভ না নেগেটিভ? ২ দিন ধরে এই বিভ্রান্তির জেরেই দেহ পড়ে আর জি করের মর্গে। ১৪ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন নিউটাউনের বাসিন্দা প্রবীর দাস। অস্ত্রোপচারের আগে করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং অস্ত্রোপচারের পরে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এর ২ দিনের মধ্যেই রোগীর মৃত্যু হয়। কোভিড পজিটিভ হওয়ার কারণে দেহ না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হাসপাতালের বিরুদ্ধে। ২ দিন ধরে হয়রানির শিকার হয় মৃতের পরিবার।


একই হাসপাতালে দু’দিনে দু’বার করা হল রোগীর কোভিড পরীক্ষা। রোগীর পরিবার সূত্রে দাবি, প্রথমবার কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট এল পজিটিভ। দ্বিতীয়বার নেগেটিভ। রিপোর্ট নেগেটিভ আসার দু’দিন পর মারা গেলেন রোগী। অভিযোগ, মৃতদেহ নিতে গিয়ে দু’দিন ধরে হয়রানির শিকার হল নিউটাউনের বাসিন্দা প্রবীর দাসের পরিবার। 


পরিবার সূত্রে খবর, গত ১৪ জুন নিমপাতা পাড়তে গিয়ে পা ফস্কে পড়ে যান ২৬ বছরের প্রবীর দাস। পাঁচিলের লোহার রড গেঁথে যায় গলায়। গলায় ছিল রূপোর চেন। তাও গলায় ঢুকে যায়। কোনওরকমে রড বের করা গেলেও রুপোর চেন বের করা যায়নি।


সেই অবস্থায় ওই দিন সন্ধেয় আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রবীরকে নিয়ে যায় পরিবার। ওই রাতেই অস্ত্রোপচার করে গলা থেকে চেন বের করেন চিকিত্‍সকরা। সে সময় রুটিন মাফিক করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।  ১৪ জুন পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ফলে কোভিড ওয়ার্ডে রাখা হয় তাঁকে । 


পরিবার সূত্রে খবর, দু’দিন পর, ১৬ জুন ফের কোবিড পরীক্ষা করা হয়। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু’বার হৃদরোগে আক্রান্ত হন ওই যুবক। 
শুক্রবার ভোররাতে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের হয়রানির শুরু এরপর।


শনিবার সকালে হাসপাতালে দেহ নিতে আসে পরিবার। তাদের অভিযোগ, হাসপাতাল জানিয়ে দেয়, কোভিড পজিটিভ হওয়ায় দেহ দেওয়া যাবে না। নিজেদের উদ্যোগে নেগেটিভ রিপোর্টের কপি রোগীর পরিবারই জোগাড় করে হাসপাতাল থেকে। 


পরিবারের দাবি, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের নার্স, চিকিত্‍সকদের নেগেটিভ রিপোর্ট দেখানো হলেও তাঁরা তা মানতে চাননি। মৃতের বান্ধবী স্বাতী দাসের অভিযোগ, 'ওরা বলে, ওদের কাছে রেকর্ড নেই। রিপোর্ট এনে দিতে বিশ্বাস করল।'হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দেহ দিতে টালবাহানার অভিযোগ দায়ের করা হয় পরিবারের তরফে। ততক্ষণে শনিবারের গোটা দিন কেটে গেছে।  


যেহেতু দুর্ঘটনায় আহত হন ওই যুবক, তাই রবিবার হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর বিকেলে মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। প্রায় দু’দিন পর নেগেটিভ রিপোর্ট পেয়ে মৃতদেহ হাতে পান পরিবারের সদস্যরা। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।