কলকাতা: অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার কিনলেও তিনি পেগাসাস (Pegasus Spyware) কেনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বলে জাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবি খারিজ করল তেলুগু দেশম পার্টি (Telugu Desam Party)। বরং বাংলার মতো তারাও পেগাসাস কেনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় বলে জানিয়েছে। টিডিপির দাবি, তারা কখনও স্পাইওয়্যার কেনেনি। পূর্বতন অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের কাছেও স্পাইওয়্যার কেনার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু, সেই প্রস্তাব তারা খারিজ করে দেয়।


ঝালদায় নিহত কংগ্রেস নেতার (Jhalda Congress Leader Murder) ভাইপো অডিও ক্লিপ এনে তৃণমূলের (TMC) তরফে চাপসৃষ্টির অভিযোগ এনেছেন সম্প্রতি। সেই প্রসঙ্গে বুধবার পেগাসাস নিয়ে বিধানসভায় মুখ খোলেন মমতা। সাধারণ কথাবার্তা রেকর্ড করে ভাইরাল করে দেওয়াকে পেগাসাসকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। সেখানেই জানান যে, বছর তিনেক আগে বাংলার কাছেও পেগাসাস কেনার প্রস্তাব এসেছিল। সেই সময় অন্ধ্রপ্রদেশ কিনলেও, তিনি প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।


বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং উপ নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকেও ফের পেগাসাস বিতর্কে মুখ খোলেন মমতা। বলেন, “ওরা সব জায়গাতেই বিক্রি করতে এসেছিল। আমাদের পুলিশের কাছেও বিক্রি করতে এসেছিল ওরা। প্রায় ৪-৫ বছর আগে। দাম বলেছিল ২৫ কোটি টাকা। আমার কাছে খবর এসে পৌঁছয়। আমি বলেছিলাম, না, আমাদের চাই না।”


ঘটনাচক্রে, ২০১৯ সাল পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশে ক্ষমতায় ছিল তেলুগু দেশম পার্টি। মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এন চন্দ্রবাবু নায়ডু ( N Chandrababu Naidu)। জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে মমতা সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে মমতার। ২০১৯ সালে কলকাতায় এসে মমতার সঙ্গে বৈঠকও করেন নায়ডু। কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী জোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছেন বলেও বরাবর জানিয়ে এসেছেন। কিন্তু পেগাসাস নিয়ে মমতার দাবি খণ্ডন করল তাঁর দল। মমতার এই দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল শুরু হয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee Update: 'দাম চেয়েছিল ২৫ কোটি টাকা, আমি না বলে দিই', পেগাসাস নিয়ে বললেন মমতা


ইজরায়েলি (Israeli Spyware Pegasus) প্রযুক্তি সংস্থা এনএসও-র তৈরি স্পাইওয়্যার হল পেগাসাস। ফোনে আড়িপাতা, ইমেল হ্যাক করার কাজে এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয়। ভারতে পেগাসাস ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত গত বছর। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তদন্তে জানা যায়, কেন্দ্রীয় সরকার ওই স্পাইওয়্যার কিনে বিরোধী শিবিরের নেতা, রাজনৈতিক কৌশলী, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, ধর্মগুরু, নির্বাচন কমিশনের আধিকারিক এমনকি সিবিআই আধিকারিকদের উপর নজরদারি চালানো হয়, তাঁদের ফোনে আড়িপাতা হয়।


রাহুল গাঁধী থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর, প্রাক্তন সিবিআই প্রধান অলোক বর্মা, প্রাক্তন জেএনইউ ছাত্রনেতা উমর খালিদ, প্রয়াত সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামী-সহ কমপক্ষে ৩০০ জনের ফোনে আড়িপাতা হয়। এর মধ্যে গত বছর জেলবন্দি অবস্থায় মৃত্যু হয় স্ট্যান স্বামীর।