কলকাতা:  বিজেপির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন দলেরই প্রবীন নেতা তথাগত রায়। তাঁর দাবি, বিজেপির ভোটের টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকা এবং নারীর ভূমিকা ছিল। তাঁর এই অভিযোগকে হাতিয়ার করে, বিজেপিকে নিশানা করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে, বিজেপি এনিয়ে কার্যত জবাব এড়িয়ে গেছে।


বুধবার 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতা শঙ্কর মণ্ডল বলেছেন, তথাগত রায় জাতীয় কার্যকরী সমিতির নেতা। দলের পুরানো নেতা। তাঁর কোনও মন্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিতে পারবে। বঙ্গ রাজনীতিতে এটা ইস্যু হতে পারে না। 


তথাগত রায়ের অভিযোগ সম্পর্কে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। এ ব্যাপারে শঙ্কর মণ্ডল বলেছেন, এই বিষয়টির  প্রাসঙ্গিকতা নেই। সেজন্যই হয়ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।  তবে বিষয়টি এভাবে আলোচনার জায়গায় চলে আসাটা দুর্ভাগ্যজনক। 


সদ্যই বিজেপি ছেড়েছেন জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তথাগত রায়ের অভিযোগের প্রাসঙ্গিকতা মেনে নিয়েও 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, যখন থেকে রাজনীতিতে আসি, তখন থেকে নারী, টাকার মতো বিষয় তাঁকে ছুঁতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারব না।  তবে অন্য কারুর ক্ষেত্রে এটা ঠিক হবে না, এমন কোনও মানে নেই।


তিনি বলেছেন,  'তথাগতবাবু খুবই গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি প্রবীণ বিজেপি নেতা। তাই তাঁর  কথা উড়িয়ে দেওয়া যায়। যা রটে তা কিছুটা হলেও ঘটে'। 


জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ২১-এর নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী বাছাই ভালো হয়নি। 


এক্ষেত্রে কি দলের যোগ্য কর্মীকে উপেক্ষা করা হয়েছে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, এটা ঠিক যে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে উপযুক্তদের উপেক্ষা করা হয়েছে। 
জয় বন্দ্যোপাধ্যায়  বলেছেন,  এ ধরনের নেতা-কর্মীদের প্রার্থী করা হলে ভালো ফল হত। বিধানসভায় বাইরে থেকে নেতারা ভোটের প্রচারে এসেছিলেন। কিন্তু এভাবে সাফল্য পাওয়া যায় না।  বাংলার মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝতে হবে। 


তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীও তথাগত রায়ের অভিযোগ নিয়ে বিজেপিকে বিঁধেছেন। তিনি বলেছেন,  বিজেপির অন্যতম গুরুত্বপূ্র্ণ নেতা। তিনি যখন এ ধরনের অভিযোগ করেন, তাহলে ধরে নিতে হবে যে,  বিজেপির ভেতরে অনৈতিক ব্যাপার চলছে। তারই প্রতিফলন ঘটছে তথাগতর কথায়। সাংঘাতিক অভিযোগ করেছেন তিনি। 


রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেছেন,  দু-একজন ব্যতিক্রম ছাড়া তারকাদের বেশিরভাগই সুযোগ-সুবিধার জন্যই আসেন। দল ও সেলিব্রিটি একে অপরকে ব্যবহার করে। আর্থিক লেনদেন মতো ঘটনা ঘটলে তা গণতন্ত্রে সমতার পরিসর তৈরি করে না।