কলকাতা: একের পর এক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায়, কলকাতা হাইকোর্টকে (Calcutta High court) নিশানা করেছিলেন তিনি। তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সেই মন্তব্য গিরে চরমে উঠল রাজনৈতিক তরজা। আর উল্লেখযোগ্য ভাবে, তাতে জড়িয়ে পড়লেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও (Jagdeep Dhankhar)। নাম না করে সাংসদ অভিষেক আদালতের অবমাননা করে সীমা লঙ্ঘন করেছেন বলে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে পাল্টা রাজ্যপালের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করছেন শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা।
অভিষেককে সীমা মনে করিয়ে দিতে গিয়ে সমালোচিত রাজ্যপাল
রবিবার রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, "ধারাবাহিক ভাবে বিজেপি-র (BJP) দালালি করতে গিয়ে রাজ্যপাল পদের সাংবিধানিক গরিমা নষ্ট করছেন জগদীপ ধনকড়। আপনি যে সাংসদকে ইঙ্গিত করে কথাগুলি বলছেন, দেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং সম্মান রয়েছে তাঁর। কোনও ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রমী পর্যবেক্ষণ ধরা পড়লে, সিস্টেমকে পূর্ণ সম্মান জানিয়েই, কোনও সাংসদ যদি সেই পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেন, তাঁকে এ ভাবে আক্রমণ করার অধিকার নেই বিজেপি-র দালাল ধনকড়ের।"
আরও পড়ুন: Jagdeep Dhankhar: 'একজন সাংসদ সীমা অতিক্রম করেছেন', রাজ্যপালের নিশানা কি অভিষেক?
এই সীমা লঙ্ঘন তরজায় নাম না করে ধনকড়কে একহাত নেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনও। তাঁর কথায়, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের ১ শতাংশ কেন্দ্রের হয়ে কাজ করছে বলায় কষ্ট হচ্ছে আপনার। কিন্তু এজেন্সি দিয়ে যখন অভিষেক এবং তাঁর পরিবারকে হেনস্থা করা হয়, তৃণমূল নেতাদের হয়রান করা হয়, কালিমালিপ্ত করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, আপনার মন কাঁদে না। বিজেপি-কে খুশি করতে পুতুল নাচছে।'
শনিবার হলদিয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের ভূমিকার সমালোচনা করেন অভিষেক। একের পর এক মামলায় সিবিআই দেওয়া নিয়ে তিনি বলেন, "আমার বলতে বলতেও আজ লজ্জা লাগে, যে বিচারব্যবস্থার এক জন-দু'জন এমন রয়েছেন, যাঁরা সম্পূর্ণ যোগসাজশে কাজ করছেন। এক শতাংশ এমন আছেন, যাঁরা তল্পি বাহকের কাজ করছেন। কিছু হলেই সিবিআই দিয়ে দিচ্ছেন। আপনার যদি মনে হয়, এই সত্যি কথা বলার জন্য ব্যবস্থা নেবেন, ক্যামেরার সামনে দু'হাজার বার এই কথা বলব।"
অভিষেকের হাইকোর্ট মন্তব্য ঘিরে তরজা
সেই নিয়ে এ দিন নাম না করে অভিষেককে আক্রমণ করেন ধনকড়। বলেন, ‘‘এক জন সাংসদ তাঁর যাবতীয় সীমা অতিক্রম করেছেন। রাজ্যের একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ করা হচ্ছে। বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ আশঙ্কাজনক। যে বিচারপতি এসএসসিতে সিবিআই-নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁকে আক্রমণ নিন্দনীয়।’’ পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অভিষেক জানিয়ে দেন, কে আসলে সীমারেখা অতিক্রম করছেন, তা বিলক্ষণ মানুষ জানেন।