কলকাতা: কলকাতায় পেট্রোলের দাম লিটারে ১০০ টাকা ছুঁতে চলল। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডিজেলের দামও। আজ কলকাতায় লিটারপ্রতি ৩৪ পয়সা বেড়ে পেট্রোলের দাম হয়েছে ৯৭ টাকা ৯৭ পয়সা। ডিজেলের দাম বেড়েছে লিটারে ৩৫ পয়সা। ফলে ডিজেলের নতুন দাম ৯১ টাকা ৫০ পয়সা। ক্রমাগত জ্বালানির দাম বাড়ায় প্রভাব পড়ছে বাজারে। জিনিসপত্রের আগুন দামে মাথায় হাত মধ্যবিত্তের। এই পরিস্থিতিতে অভিনব প্রতিবাদ কামারহাটির তৃণমূল সাংসদ মদন মিত্রর। ভবানীপুরে রিকশ টেনে পেট্রো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানালেন তিনি।
মদন মিত্র বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, একদিকে একটা পার্টি রামের নামে তলোয়ার চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, তৃণমূল রিকশা চালককে রিকশতে বসিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
রিকশওয়ালাকে দেওয়া হয় নতুন পাঞ্জাবি। তিনি রিকশয় বসে রয়েছেন। যাতে গরম না লাগে সেজন্য হাওয়া করা হয়। সঙ্গে বাউল গান। আর এরইমধ্যে রিকশা চালালেন রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের এই কর্মসূচীর পর রিকশা চালকের পা গঙ্গাজল দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হবে। এভাবে অভিনব প্রতিবাদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনকে পাঁচ কেজি সব্জি এক টাকায় দেওয়া হয়।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সম্প্রতি বলেছেন, মানছি জ্বালানির দামবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু একবছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে করোনার ভ্যাকসিনের জন্য। এই কঠিন পরিস্থিতিতে কল্যাণমূলক প্রকল্পের জন্য আমরা অর্থ সঞ্চয় করছি।
করোনা পরিস্থিতির জেরে আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে দেশ। তার ওপর পেট্রোল-ডিজেলের এইভাবে দাম এক-দুদিন অন্তর বেড়ে চলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। এর ফলে আশঙ্কিত মধ্যবিত্তরা।
করোনা আবহে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তার ওপর পেট্রোল-ডিজেলের এইভাবে দাম বেড়ে চলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব বিরোধীরা।
অর্থনীতিবিদদের একাংশের যুক্তি, একটা স্তরে সরকারের উচিত দাম নিয়ন্ত্রণ করা। তাঁদের মতে, এটা জরুরি পণ্য। এর সঙ্গে বাজারের অন্য পণ্যের দামের ওঠানামা যুক্ত। এর দায় এড়াতে পারে না সরকার। একটা স্তরে দাম নিয়ন্ত্রমের করা উচিত। জিএসটি আওতায় আনছে না। এটা আনলে ভাল হতো।
কয়েকদিন এই ইস্যুতে ভারসাম্য রক্ষার পরামর্শ দেন নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার। তিনি বলেন, সবসময় এটা বলা হয় যে, পেট্রোল-ডিজেলের মৃল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কিছু করুক। কিন্তু আমাদের ভারস্যমাও রক্ষা করতে হবে। সরকারের দায়িত্ব মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা। আমি আশা করি, যাঁদের এই দায়িত্ব, তাঁরা ভারসাম্য রক্ষা করবেন।