মস্কো: গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষ নিয়ে চিনের আচরণে বেজায় ক্ষুব্ধ তা আরও একবার স্পষ্ট করল ভারত। রাশিয়ায় সফররত প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওই ফেংহের সঙ্গে কোনও প্রকার আলোচনায় অংশ নেবেন না তিনি।


রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর আমন্ত্রণে সেদেশে তিনদিনের সফরে গিয়েছেন রাজনাথ। উপলক্ষ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৭৫ তম ভিক্টরি ডে সামরিক কুচকাওয়াজের বর্ষপূর্তি। একইভাবে, রাশিয়ার আমন্ত্রণে সেখানে পৌঁছেছেন চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনিও এদিনের ভিক্টরি ডে প্যারেডে উপস্থিত থাকবেন।


এই প্রেক্ষিতে চিনা সংবাদমাধ্যম দাবি করে, গালওয়ান-ইস্যু নিয়ে মস্কোয় বৈঠক করবেন রাজনাথ-ওয়েই। যদিও, ভারত ওই দাবিকে খারিজ করেছে। বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে চিনের প্রতিরক্ষমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনাথের এই মুহূর্তে কোনও বৈঠকের সম্ভাবনা নেই। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের মুখপাত্র ভরতভূষণ বাবু জানিয়েছেন, রাজনাথের সঙ্গে ওইয়ের কোনও প্রকার আলোচনা হবে না।


প্রসঙ্গত, ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার ওপর হামলা চালায় চিনা ফৌজ। মৃত্যু হয় ২০ জন ভারতীয় সেনা-জওয়ানের। চিনের ৪৩ জন জওয়ানেরও মৃত্যু হয় সংঘর্ষে। এরপর ইন্দো-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এবার যুদ্ধবিমান নিযুক্ত করে ভারত। এয়ারস্পেসে বিশেষ নজরদারির দায়িত্বে রাখা হয় পি৮আই বিমানকে।


রবিবারই, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা আগ্রাসনের জবাবে, দরকার হলে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে সবুজ সঙ্কত দেয় কেন্দ্র। পাশাপাশি, সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, ৩ বাহিনীকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে কেন্দ্র। ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল থেকে কেনা যাবে অস্ত্রশস্ত্র। চিনের সঙ্গে সংঘাতের আবহে গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। সূত্রের দাবি, রবিবার চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ ও ৩ বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে, কড়া ভাষায় চিনকে জবাব দেওয়ার অনুমতি দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।


তবে, প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠক না হলেও, ভারত ও চিনের বিদেশমন্ত্রী যথাক্রমে এস জয়শঙ্কর এবং ওয়াং ই-এর সঙ্গে নিয়ে একটি ভার্চুয়াল ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরভ। মূলত, সীমান্ত সমস্যা নিরসনে দুই দেশকে এক টেবিলে বসানোর প্রচেষ্টা করে রাশিয়া। বৈঠকের পর লাভরভ বলেন, আমার মনে হয় না, দুই দেশের কোনও সাহায্যের প্রয়োজন। বেজিং থেকে চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ানও বলেন, উভয় দেশ পারস্পরিক সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে রাজি হয়েছে।