নয়াদিল্লি: পেজার বিস্ফোরণের পর এবার ওয়াকি-টকি, ল্যান্ডলাইন ফোন বিস্ফোরণ লেবাননে। পর পর বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে লাগাতার। কয়েকশো মানুষ এই মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন হাসপাতালে। এই হামলার পিছনে যে তাদের হাত রয়েছে, ইতিমধ্যেই সেই ইঙ্গিত দিয়েছে ইজরায়েল। কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটেছে যে ওয়াকি-টকিগুলিতে, সেগুলির নির্মাণকারী সংস্থা কে, সেই নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছে এবারও। বুধবার পেজার বিস্ফোরণের পরও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। (Lebanon Walkie-Talkie Explosions)
জাপানের রেডিও সরঞ্জাম নির্মাণকারী সংস্থা ICOM-এর তৈরি ওয়াকি-টকিগুলিতেই বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানা গিয়েছে। পাঁচ মাস আগে যখন তাইওয়ানের থেকে ৫০০০ পেজার কেনা হয়, ওই একই সময়ে জাপানের ওই সংস্থার কাছ থেকে ওয়াকি-টকিগুলি কেনা হয় বলে জানিয়েছে লেবানন। ওই সময়ই কারিকুরি করে পেজার এবং ওয়াকি-টকিগুলিতে ইজরায়েল বিস্ফোরক পদার্থ ঢুকিয়ে দেয় বলে মনে করা হচ্ছে। (Hezbollah News)
তাইওয়ানের পেজার নির্মাণকারী সংস্থা যদিও জানিয়েছে, তাদের সংস্থার নাম ব্যবহৃত হলেও, আসেল ইউরোপের একটি সংস্থা পেজারগুলি তৈরি করে। কিন্তু ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণ নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারছে না জাপানের ICOM. তারা ওই ওয়াকি-টকি আদৌ লেবাননে সরবরাহ করেছে কি না, তা নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে।
যে ওয়াকি-টকিগুলিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, একদশক আগেই সেগুলির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছে ICOM. এমনকি ওয়াকি-টকিতে ব্যবহৃত ব্যাটারির উৎপাদনও ২০১৪ সাল থেকে বন্ধ বলে জানানো হয়েছে। টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত ICOM. বিস্ফোরণে চুরমার হয়ে যাওয়া ওয়াকি-টকিতে সংস্থার লোগোও পাওয়া গিয়েছে। বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখছে বলে জানা গিয়েছে।
জাপানের সিংহভাগ রেডিও-ই ICOM-এর তৈরি। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া ওয়াকি-টকিগুলি আলাদা করে তৈরির বরাতে কর্তৃপক্ষের সায় ছিল কি না, তাও স্পষ্ট নয়। সংস্থার দাবি, বিদেশে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ডিস্ট্রিবিউটরদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মাধ্যমেই ক্রেতার কাছে জিনিসপত্র পৌঁছয়। তাদের তৈরি ওয়াকি-টকির নকশা নকল করা হতে পারে বলেও দাবি ICOM-এর। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াকি-টকিগুলির পিছনে সংস্থার লোগো, এমনকি 'মেড ইন জাপান' লেখাও দেখা গিয়েছে। তাই ইজরায়েল কীভাবে কারিকুরি করে বিস্ফোরক ঢোকাল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এখনও পর্যন্ত ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণে ২০ জন মারা গিয়েছেন বলে খবর। প্রায় ৪৫০ জন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। হেজবোল্লাকে নিশানা করে হামলা চালানো হলেও, হতাহতের তালিকায় রয়েছেন দেশের সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে ইজরায়েলের দাবি, "যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটেছে"। জনবহুল এলাকা কেঁপে উঠেছে বিস্ফোরণে। গোটা ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে আন্তর্জাতিক মহল।