নয়াদিল্লি: দেশের কয়েকটি হাইকোর্টে দায়ের হওয়া আধারের সঙ্গে সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত করা সংক্রান্ত যাবতীয় পিটিশন বদলি করিয়ে নিজের হাতে নিল সুপ্রিম কোর্ট। এ ব্যাপারে ফেসবুকের দায়ের করা পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এই পদক্ষেপ করল বিচারপতিদ্বয় দীপক গুপ্তা ও অনিরুদ্ধ বোসকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত বিষয়টির শুনানি ধার্য করেছে সামনের জানুয়ারিতে। কেন্দ্রের তরফে বেঞ্চে নতুন ও সংশোধিত সোস্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত নিয়মবিধি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানোর জন্য সময় চাওয়া হয়।
এদিন বেঞ্চের সামনে ইন্টারনেট ফ্রিডম অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান বলেন, স্বাধীনতা বিপন্ন হতে বসেছে, গোপনীয়তা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সামনে আসছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, সোস্যাল মিডিয়া ইন্টারমিডিয়ারি অর্থাত টেলিকম সার্ভিস পরিষেবা, নেটওয়ার্ক সার্ভিস পরিষেবা, ইন্টারনেট সার্ভিস পরিষেবা প্রদানকারীদের সরকারি এজেন্সিগুলির সঙ্গে তথ্য শেয়ার করার ব্যাপার দায়বদ্ধ করতে নিয়মবিধি তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। নাগরিকদের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারে হস্তক্ষেপের চেষ্টা হচ্ছে, এই অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। ব্যক্তিগত অধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে বলে অভিমত জানান তিনি।
আধারের সঙ্গে সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের সংযুক্তিকরণ চেয়ে পেশ হওয়া একগুচ্ছ পিটিশন বদলির আবেদন করেছিল ফেসবুক। তাতে সায় দেয় সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। মাদ্রাজ, মধ্যপ্রদেশ ও বম্বে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া এইসব পিটিশনে সওয়াল করা হয়, এহেন সংযুক্তিকরণে অপরাধীরা সোস্যাল মিডিয়াকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগাতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রিকে সব পিটিশন প্রধান বিচারপতির সামনে পেশ করতে বলে যাতে আগামী জানুয়ারিতে শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করা যায়।
এদিন ফেসবুকের পিটিশনগুলি বদলির আবেদনের ব্যাপারে আপত্তি তুলে নেন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল।
তুষার মেহতা কেন্দ্রের তরফে বলেন, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা খর্ব করা নয়, নিয়মবিধি তৈরির উদ্দেশ্য জাতীয় সুরক্ষা, সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা। বেনুগোপাল মন্তব্য করেন, সন্ত্রাসবাদী গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার দাবি করতে পারে না।
সোমবার কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে সোস্যাল মিডিয়া, ডিজিট্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত নিয়মবিধি চূড়ান্ত করে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। খসড়া নিয়মবিধি তৈরি আছে, তবে তা নিয়ে অন্য মন্ত্রকগুলির সঙ্গে আলোচনা করতে হবে, আইনমন্ত্রকের ছাড়পত্র লাগবে।