নয়াদিল্লি ও কলকাতা: কন্টেনমেন্ট জোন ছাড়া দেশের সর্বত্র মদ বিক্রিতে অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। সোমবার থেকেই কার্যকর হয়েছে সেই নির্দেশিকা।


সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, কেবলমাত্র কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরেই "স্ট্যান্ড অ্যালোন" বা পৃথক অফ-শপগুলিই মদ বিক্রি করতে পারবে। শপিং মল বা কমপ্লেক্সে থাকা কোনও মদের দোকান খোলা থাকবে না। নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, মদ কেনার সময় ঠিক কী কী নিয়ম পালন করতে হবে। সেখানে মানুষকে যথাযথভাবে সোশাল ডিস্টান্সিং সহ যাবতীয় সুরক্ষাবিধি বজায় রাখারও আবেদন করা হয়েছে।


কিন্তু, বাস্তবে, দেখা যায় উল্টো চিত্র। মদের দোকান খুলতেই সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। দোকান খুলতে না খুলতেই হুলুস্থূল! নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই মানুষ মদের দোকানের সামনে জমায়েত করেন। গোলমালের জেরে বেগতিক বুঝে কোথাও কোথাও বন্ধই রাখতে হল মদের দোকান। অনেক বিক্রেতা সংষয় প্রকাশ করেন যে, স্টক দ্রুত নিঃশেষিত হয়ে যাবে। যে কারণে, বিভিন্ন রাজ্য মদ বিক্রির ওপর নতুন নির্দেশিকা জারি করে অবশ্যই কেন্দ্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই।


এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক কেন্দ্রের নির্দেশিকার শর্তাবলী--




  • ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে, কিনতে হবে মদ।

  • লাইনে ৫ জনের বেশি দাঁড়ানো যাবে না।

  • ক্রেতাদের নিজেদের ব্যাগ আনতে হবে।

  • মাস্ক সহ সুরক্ষার সব ব্যবস্থা নিতে হবে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে।

  • মদের দোকানে রাখতে হবে স্যানিটাইজার।

  • যথাসম্ভব অনলাইন বা ডিজিটাল লেনদেন করতে হবে।


এবার এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক বিভিন্ন রাজ্যের মদের দোকান সংক্রান্ত বিভিন্ন নির্দেশিকা--


প্রথমেই জানিয়ে রাখা প্রয়োজন, মদ হল অনত্যাবশ্যক সামগ্রী। ফলত, মদের দোকান কেবলমাত্র সকাল ৮টা থেকে সন্ধে ৭টার মধ্যেই খোলা থাকবে। তার বাইরে নয়। এবার বিভিন্ন রাজ্য প্রশাসন সেই অনুযায়ী, মদের দোকান খোলা রাখার সময়সীমা স্থির করে দিয়েছে।


পশ্চিমবঙ্গ - কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী এবং বাস্তব পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে সোমবারই নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের আবগারি দফতর। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মদের দোকান। একই সময়ে ২টির বেশি বোতল কেনা বা বিক্রি করা যাবে না। মাস্ক না পরে এলে মদ বিক্রি করা হবে না। ক্লাব, হোটেল বা রেস্তোরাঁর বার বন্ধ থাকবে। ভিড় এড়াতে এবং ক্রেতাদের লাইন ঠিক রাখার জন্য দোকান কর্তৃপক্ষকেও ব্যবস্থা নিতে হবে। ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা প্রশাসনকে পুলিশ ও আবগারি দফতরের সঙ্গে সমন্বয় স্থাপন করে চলতে হবে।


দিল্লি - রাজধানীতে সকাল ৯টা থেকে সন্ধে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মদের দোকান। সোশাল ডিস্টান্সিং ঠিকমতো যাতে বজায় রাখা হয়, তার জন্য দোকানের বাইরে মার্শালদের মোতায়েন করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকাকে বজায় রেখে ১৫০ দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দিল্লিতে প্রায় ৮৫০ দোকান রয়েছে।


উত্তরপ্রদেশ - দোকান খোলা সকাল ১০টা থেকে সন্ধে ৭টা। সোশাল ডিস্টান্সিং বজায় রাখতে দোকানের ভিতর ৫ জনের বেশি প্রবেশ নিষিদ্ধ। হোটেল-রেস্তোরাঁয় বিক্রি নিষিদ্ধ।


মহারাষ্ট্র - অন্যান্য জেলায় শুরু হলেও, মুম্বই শহর, শহরতলি, ঠাণে ও পুণেতে এখনই বিক্রিতে অনুমতি নয়।


ছত্তিসগড় - দোকান খোলা সকাল ৮টা থেকে সন্ধে ৭টা। জেলাগুলি নিজেদের সুবিধে মতো খুলবে। হোম ডেলিভারি শুরু করার পরিকল্পনা সরকারের।


কর্ণাটক - দোকান খোলা সকাল ৯টা থেকে সন্ধে ৭টা। সোশান ডিস্টান্সিং ঠিকমতো বজায় রাখার জন্য দোকানগুলির উদ্দেশ্যে সরকার বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে।


অসম - রাজ্যের যাবতীয় মদের দোকান খোলা হবে। এর আগে, রাজ্য জানিয়েছিল, এপ্রিল ১২ তারিখ থেকেই মদের দোকান খোলা হবে। কিন্তু, সরকার লকডাইনের নতুন শর্তাবলি জারি করায় তা হয়নি।


হিমাচল প্রদেশ - ২২ মার্চ থেকে ৩ মে পর্যন্ত রাজ্যের সব মদের দোকানের লাইসেন্স ফি মকুব করে দেওয়া হয়েছে। ৪ তারিখ থেকেই মদের দোকান খুলেছে।


কেরল - রাজস্বের ক্ষতি সত্ত্বেও এখানে লকডাউনের কথা মাথায় রেখে মদের দোকান বন্ধই থাকছে।


পঞ্জাব - এখনই খুলছে না মদের দোকান।