কোচি: বর্জ্য কারখানায় আগুন লেগেছিল এক সপ্তাহ আগে। তাতেই দমবন্ধ পরিস্থিতি কোচিতে। শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন বহু মানুষ।  চোখজ্বালা, গলাজ্বালার সমস্যাতেও ভুগছেন স্থানীয়রা (Kochi Fire)। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে সেখানে লকডাউনের সময়কার বিধিনিয়ম চালু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত মানুষজনকে বাইরে বেরনো এড়িয়ে যেতে বলা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বেরোলেও N95 মাস্কে মুখ ঢেকে বেরনোর নির্দেশ (Waste Plant)।


গত কয়েক দিনে ব্রহ্মপুরম ছাড়িয়ে আশেপাশের এলাকাও কার্যত ঢেকে গিয়েছে কালো ধোঁয়ায়


সপ্তাহখানেক আগে কোচির ব্রহ্মপুরমে একটি বর্জ্য কারখানা.য় আগুন লাগে। আগুন লাগার দ্বিতীয় দিনে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন দমকল কর্মীরা। কিন্তু কালো ধোঁয়া বন্ধ করা যায়নি। বরং গত কয়েক দিনে ব্রহ্মপুরম ছাড়িয়ে আশেপাশের এলাকাও কার্যত ঢেকে গিয়েছে কালো ধোঁয়ায়। আকাশই কার্যত ঢাকা পড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়েছে। 


এই আবহে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্লাস্টিক, ধাতব পদার্থ এবং রাসায়নিক পোড়া ধোঁয়ায় বসতি এলাকা ছেয়ে গিয়েছে। তাতে চোখ জ্বালা, গলা জ্বালার সমস্যাও দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেরল সরকারের তরফে নাগরিকদের যতটা সম্ভব বাইরে বেরনো এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। সকালের প্রাতঃভ্রমণ, খেলাধুলো আপাতত বন্ধ। বাইরে যদি বেরোতেই হয়, N95 মাস্ক পরে বেরোতে হবে। 


আরও পড়ুন: Tripura News: 'সন্ত্রাস' কবলিত এলাকা দেখতে গিয়ে পাল্টা 'আক্রান্ত' প্রতিনিধিদল


শুধু তাই নয়, ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা সেখানে রয়েছেন। কোচির স্কুল-কলেজ তো বটেই, পাশের এরনাকুলামের স্কুল-কলেজও বন্ধ রাখা হয়েছে। এই মুহূর্তে কোচির যা পরিস্থিতি, তাতে কোভিডের সময়ের সঙ্গে তুলনা চলে আসছে রাস্তায় হাতেগোনা কিছু মানুষ চোখে পড়ছে। মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোচ্ছেন না কেউ। বয়স্করা কার্যত গৃহবন্দি।


স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫০ হাজার টন আবর্জনায় আগুন ধরে যায়। দমকলের দাবি, যে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আগুন লেগেছিল, তার মধ্যে ৭০ শতাংশ জায়গা থেকেই ধোঁয়ার নির্গমন বন্ধ করতে পেরেছে তারা। বাকি ৩০ শতাংশ জায়গাকেও নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। কিন্তু প্লাস্টিকের জন্যই ধোঁয়া বন্ধ করা যাচ্ছে না। 


এই মুহূর্তে সেখানে মোতায়েন রয়েছে দমকলের ৩০টি দল। নৌবাহিনীর হেলিকপ্টারও উড়িয়ে আনা হয়েছে। উপর থেকে জল ছিটিয়ে নেভানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু আবর্জনার পাহাড়ে প্লাস্টিক, ধাতু এবং বার থাকাতেই বিষাক্ত গ্যাসে ছেয়ে গিয়েছে চারিদিক। 


গোটা শহর গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে আদালত


উল্লেখ্য, কেরলের ১৪টি জেলার মধ্যে একমাত্র কোচির ব্রহ্মপুরমেই কেন্দ্রীয়. সরকারের বর্জ্য কারখানা রয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনায় ইতিমধ্যেই কোচি- পৌরসভাকে তিরস্কার করেছে কেরল হাইকোর্ট। গোটা শহর গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে আদালত। কী করে এই ঘটনা ঘটল,  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী পরিকল্পনা রয়েছে পৌরসভার, তার রিপোর্ট চাওয়া  হয়েছে। কিন্তু আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি। তদন্ত চলছে।