নয়াদিল্লি: বাদল অধিবেশন শুরু হলেও, আলোচনা এগোয়নি বেশিদূর। বরং মণিপুর হিংসা (Manipur Violence) প্রসঙ্গে বার বার মুলতবি হয়েছে অধিবেশন। লোকসভাকে অচল করে রাখার জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করে চলেছেন সরকার এবং বিরোধী পক্ষের সাংসদরা। সেই নিয়ে এবার তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। সংসদের মর্যাদা রক্ষা করতে, সকলের আচরণ না শোধরানো পর্যন্ত তিনি লোকসভায় যাবেন না বলে জানিয়েছেন। (Om Birla)


সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সরকার এবং বিরোধী, দুই পক্ষের সাংসদদের আচরণেই আহত স্পিকার বিড়লা। যেভাবে লাগাতার অধিবেশন মুলতবি করতে হচ্ছে, হই-হট্টগোল হচ্ছে, তাতে সংসদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মত তাঁর। তাই সাংসদরা আচরণে সংশোধন না ঘটানো পর্যন্ত তিনি অধিবেশনে উপস্থিত হবেন না বলে জানিয়েছেন। 


বুধবার লোকসভার অধিবেশন শুরু হলেও আসনে দেখা যায়নি স্পিকারকে। মণিপুর নিয়ে আজও উত্তাল হয়ে ওঠে অধিবেশন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতি দাবি করেন তাঁরা। সেই নিয়ে সরকার পক্ষের সাংসদদের সঙ্গে শুরু হয় বচসা, বিবাদ। এর ফলে আজও লোকসভার অধিবেশন মুলতবি করতে হয়। তার পরই স্পিকারের সিদ্ধান্ত জানা যায়।


আরও পড়ুন: Lalu Prasad Yadav: দোষ রয়েছে বলেই রা কাড়ছেন না, মণিপুর নিয়ে মোদিকে বিঁধলেন লালু


এদিন স্পিকার বিড়লার পরিবর্তে লোকসভার অধিবেশনে পৌরহিত্য করছিলেন বিজেপি-র কিরীট সোলাঙ্কি। বার বার শান্ত হওয়ার আর্জি জানাতে শোনা যায় তাঁকে। কিন্তু তাতেও হই-হট্টগোল থামেনি। তাতেই শেষ মেশ অধিবেশন মুলতবি করে দিতে হয় আজকের মতো।


বুধবারই লোকসভায় ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটোরি অফ দিল্লি (আমেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৩, অর্থাৎ রাজধানীর এলাকা সংশোধন বিল উত্থাপিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাওয়ায়, সেই বিলটি আলোচনার জন্য তোলাই যায়নি। ফলে ভোটাভুটির সুযোগই মেলেনি। নতুন করে বিলটি তোলার জন্য অনুরোধ জানান বিজেপি-র হুইপ।


সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শুধুমাত্র বিরোধী সাংসদদের আচরণেই নয়, ট্রেজারি বেঞ্চের আচরণেও অসন্তুষ্ট স্পিকার বিড়লা। লোকসভার কার্যাবলী মূলত স্পিকারই নিয়ন্ত্রণ করেন। হই-হট্টগোল হলেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ায়, অধিবেশনে হাজির না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বিরোধী শিবিরের সাংসদ এবং ট্রেজারি বেঞ্চকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই।


যদিও সংসদের অচলাবস্থার জন্য সরকারের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী সংসদের প্রধান। পদের নিরিখেই লোকসভায় জবাবদিহি করতে বাধ্য তিনি। কিন্তু মণিপুর নিয়ে আগাগোড়া নীরবতাই পালন করছেন তিনি।