নয়াদিল্লি: লোকসভার (Lok Sabha) মধ্যে কারও ধর্ম (religion) বা জাতপাত (caste) নিয়ে মন্তব্য (comment) নয়, সদস্যদের দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বার্তা দিলেন অধ্যক্ষ (speaker) ওম বিড়লা (Om Birla)। তাৎপর্যপূর্ণভাবে কংগ্রেস সাংসদ এ আর রেড্ডির অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য করেন লোকসভার স্পিকার। কংগ্রেস সাংসদের অভিযোগ ছিল, হিন্দিতে তাঁর দক্ষতার কথা বলতে গিয়ে তাঁর তথাকথিত 'নিচু জাতের' কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অধ্যক্ষ মনে করান, সাধারণ মানুষ ধর্ম ও জাতপাত নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদে তাঁদের নির্বাচন করে পাঠাননি। এমনকি অভিযোগ জানাতে গিয়ে কংগ্রেস সাংসদের মুখে 'জাত-মন্তব্য' শোনা গেলে তাতেও কড়া বার্তা দেন লোকসভার স্পিকার।
কী বললেন অধ্যক্ষ?
ওম বিড়লা বলেন, 'এখানে কেউ এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করবেন না। তা হলে আমাকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।' তবে একই সঙ্গে কংগ্রেস সাংসদকেও অধ্যক্ষের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে এদিন। কেন? এদিন লোকসভায় এ আর রেড্ডি প্রশ্ন পেশ করতে গিয়ে গুজরাতে নরেন্দ্র মোদির মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময়ের প্রসঙ্গ তুলে আনেন। তখন অধ্যক্ষ তাঁকে থামিয়ে শুধু প্রশ্নটুকু করতে বললে কংগ্রেস সাংসদের জবাব ছিল, অধ্যক্ষ এভাবে বাধা যেন না দেন। বিষয়টি নিয়ে ওম বিড়লা পরে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে বলেন, 'সদস্যদের বুঝিয়ে দিন যে তাঁরা যেন ভবিষ্যতে অধ্যক্ষের সঙ্গে এই ভাবে কথা না বলেন। কথায় বাধা দেওয়া যাবে না, এটা যেন না বলেন তাঁরা। বুঝলেন কী বলছি?'
বিতর্ক শুরু কোথায়...
ডলারে টাকার মূল্য পড়ে যাওয়া ঘিরে প্রশ্ন করছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। তখনই অতীতের একটি প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী সে সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস সাংসদ মনে করান, মোদি তখন দাবি করেছিলেন টাকার এখন 'আইসিইউ'-তে। তখনই বাধা দিয়ে অধ্যক্ষ জানান, সাংসদ যেন নিজের প্রশ্নটুকুতে আসেন।এ আর রেড্ডি পাল্টা বলেন, 'আপনি আমাকে বাধা দিতে পারেন না।' তার পরই কড়া বার্তা অধ্যক্ষের। এদিন সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু এদিন ফোকাসে ধর্ম ও জাতপাতের প্রসঙ্গে অধ্যক্ষের দ্ব্যর্থহীন অবস্থান। প্রসঙ্গত, ঠিক দিনছয়েক আগেই 'বাবাসাহেব' বি আর অম্বেডকরের ৬৬ তম মৃত্য়ুবার্ষিকী পালন করেছে দেশ। ভারতীয় সমাজব্যবস্থার সঙ্গে জাতপাতের প্রথা যে কতটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত, সেটা অল্প বয়সেই টের পেয়েছিলেন তিনি। স্বাধীন ভারতের সংবিধানের রূপকার তাই আজীবন লড়ে যান এই প্রথার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন:অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার স্বরূপনগরে, চাপ নিতে না পেরে আত্মঘাতী, বলছে পরিবার