মুম্বই: কার দিকে পাল্লা ভারী? মহারাষ্ট্রের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এবং এনসিপির প্রতিষ্ঠাতা শরদ পওয়ার না কি তাঁর ভাইপো অজিত পওয়ার? দলের অধিকাংশ নেতা-বিধায়কের সমর্থন কার দিকে? তারই অগ্নিপরীক্ষা আজ। 


মুম্বইয়ে দুটি পৃথক জায়গায় মিটিং ডেকেছেন শরদ এবং অজিত। এনসিপির নামেই ডাকা হয়েছে দুটি আলাদা মিটিং। দুপক্ষের তরফেই পোস্টার-ফ্লেক্সে ছেয়ে গিয়েছে নানা এলাকায়। কোথাও শরদ পওয়ারের নামে দলের নেতা-কর্মী-বিধায়কদের মিটিংয়ে যোগ দিতে বলা হয়েছে, কখনও আবার অজিত পওয়ারের নাম নিয়ে বাস্তবোচিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ডাক দেওয়া হয়েছে।


শরদ পওয়ার শিবিরের তরফে একটি হুইপ জারি করা হয়েছে। দলের টিকিটে জেতা সব বিধায়ককে এদিন ১টার সময় মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে হওয়ার মিটিংয়ে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। উল্টোদিকে বান্দ্রায় অজিত শিবিরের তরফে মিটিং ডাকা হয়েছে। অজিত পওয়ার দাবি করেছিলেন এনসিপির ৫৩ জন বিধায়কের মধ্যে ৪৩ জনের সমর্থন তাঁর সঙ্গে রয়েছে। সেই দাবি নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছিল শরদ পওয়ার শিবিরের তরফে। ফলে এদিনের দুটি বৈঠক কার্যত দুই শিবিরের শক্তিপরীক্ষার লড়াই বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 


মহারাষ্ট্রের বিজেপি-একনাথ শিন্ডের শাসক শিবিরে যোগ দেওয়ার পরে অজিত পওয়ার দাবি করেছিলেন, এনসিপি দল হিসেবেই শাসক শিবিরে যোগ দিয়েছে। তাঁরা দল বদল করেননি। উল্টোদিকে এরই মধ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইনের প্রশ্ন তোলা হয়েছে শরদ পওয়ার শিবিরের তরফ থেকে। মহারাষ্ট্রের বিধানসভার স্পিকারের কাছে অজিত পওয়ার এবং মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়া বাকি ৮ জন বিধায়কের বিধায়ক পদ খারিজ করার আবেদন জানানো হয়েছে। 

এই পরিস্থিতিতে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করতে মরিয়া অজিত পওয়ার শিবির। এনসিপির মধ্যে এই টানাপড়েন দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। শরদ পওয়ার তাঁর হাতে গড়েছেন এনসিপিকে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর ছায়াসঙ্গী ছিলেন তাঁরই ভাইপো অজিত পওয়ার। দলের লাগাম কার হাতে থাকবে, রাজনৈতিক উত্তরাধিকার কে পাবেন তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। এরই মধ্যে সম্প্রতি শরদ তাঁর মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেকে এনসিপির ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট পদে বসান, কার্যত এনসিপির রাজনৈতিক উত্তরাধিকার মেয়ের হাতেই দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন শরদ। তারপরেই ক্রমশ চওড়া হচ্ছিল ফাটল। এরই মধ্যে বিজেপি-একনাথ শিন্ডে সরকারের সঙ্গে হাত মেলান অজিত এবং তাঁর সঙ্গীরা। একাধিক বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। উপমুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেছেন অজিত পওয়ার, তাঁরই সঙ্গে আরও আট এনসিপি বিধায়ক মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন। অজিত পওয়ার পাশে রয়েছেন একসময় শরদ পওয়ারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ প্রফুল্ল প্যাটেল এবং ছগন ভুজবলের মতো বরিষ্ঠ এনসিপি নেতাও। 


আরও পড়ুন: স্কুল শেষ করে কলেজে? পাখির চোখ হোক 'পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং'