ইন্দোনেশিয়া: বিয়ের আগে যৌন সম্পর্কে জড়ানোয় বেত্রাঘাত। বেতের ঘায়ে আধমরা যুবকের জ্ঞান ফিরিয়ে আবার বেত মারা হল বাকি সাজা পূরণ করার জন্য! ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের রক্ষণশীল অ্যাচে এলাকার ঘটনা। সেখানে জুয়া, মদ্যপান, সমকামী বা প্রাক-বিবাহ যৌনতা সহ একাধিক অপরাধ ইসলামি আইনে নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক স্তরে প্রবল শোরগোল, নিন্দা সত্ত্বেও এসব অপরাধে দোষীকে জনসমক্ষে চাবুক বা বেত মারা বহাল রয়েছে। অ্যাচেই সবচেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার একমাত্র জায়গা যেখানে কঠোর ভাবে ধর্মীয় আইন কার্যকর হয়।
বৃহস্পতিবার ২২ বছরের ওই ছেলেটিকে এক মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ায় ১০০ ঘা বেতের বাড়ির সাজা দেওয়া হয়। অ্যাচের তিমুর জেলায় তার মতোই সাজা দেওয়া হয় এক মহিলাকে, পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোয়। স্থানীয় মসজিদের বাইরে দেখা যায়, ছেলেটি মুখোশধারী শরিয়া অফিসারকে মূর্ছা যাওয়ার আগে কাতর আবেদন করছে পিঠে বেতের ঘা বন্ধ করার জন্য। কিন্তু তার জ্ঞান ফিরিয়ে আবার চলে বেত্রাঘাত। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। শপাঁচেক লোকজনের মনে এই দৃশ্য দেখেও কোনও হেলদোল হয়নি। কেউ কেউ চিত্কার করে ওঠে, আরও মারো, আরও। জনৈক প্রত্যক্ষদর্শী মহম্মদ ইউনুসকে বলতে শোনা যায়, আইন ভাঙার এই ফল সহ্য করতে হবে ওকে।
গত জুলাইয়ে তিনজনের প্রত্যেককে বেত্রাঘাত করা হয় ১০০ বার, প্রাক-বিবাহ যৌনতার জন্য। গত বছর দুটি নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের জন্য ধরা পড়া দুজনকে ১০০ বার বেত মারা হয়। অন্য ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রেও চাবুক বা বেত্রাঘাত করা হয়, তবে সংখ্যায় কম।
গত অক্টোবরে অ্যাচের প্রশাসনিক কর্তারা ঘোষণা করেন, বিপন্ন জন্তুজানোয়ার, ওরাংওটাং বাঘ ও অন্য বন্যপ্রাণী চোরাশিকারীদেরও নতুন আইনে ১০০টা পর্যন্ত বেত্রাঘাতের সাজা হবে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি প্রকাশ্যে বেত্রাঘাতকে নিষ্ঠুর বলে নিন্দা করেছে। এর অবসান চেয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। কিন্তু এমন সাজার পক্ষে বিপুল সমর্থন জানিয়েছে অ্যাচের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ।