নয়াদিল্লি: বিগত দু'মাস ধরে অশান্তির আগুনে জ্বলছে মণিপুর (Manipur Violence)। হতাহতের সংখ্যা শতাধিক, ঘরছাড়া হাজার হাজার। সেই আবহে মণিপুর সফরে গিয়ে তীব্র বাধার মুখে পড়লেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi)। বৃহস্পতিবার সকালে মণিপুর পৌঁছলেও, সাধারণ মানুষের কাছে তাঁকে পৌঁছতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রাহুলের। এই ঘটনায় সরাসরি কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং মণিপুরে বিজেপি সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি। ট্যুইটারে যে ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি, তাতে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। তা নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার (Rahul Gandhi in Manipur)।
বৃহস্পতিবার হিংসা, অশান্তিতে জর্জরিত মণিপুরে পৌঁছন রাহুল। কিন্তু গাড়ি নিয়ে তাঁকে এগোতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও পোস্ট করেছেন রাহুল, তাতে দেখা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে রাস্তায় কার্যত জনসমুদ্র নেমে এসেছে, যার অগ্রভাগে রয়েছেন মহিলারা। কিন্তু ব্যারিকেড করে তাঁদের আটকে দিচ্ছে পুলিশ। রাহুলের গাড়ির সামনের অংশ কার্যত আঁকড়ে ধরেন এক প্রৌঢ়া। কাঁদতে কাঁদতে রাহুলের সঙ্গে একবার দেখা করার, কথা বলার আর্তি জানান তিনি। কিন্তু রাহুলের কাছে পৌঁছতে দেওয়া হয়নি কাউকে। বার বার আর্তি জানালেও, রাহুলের গাড়ির কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও পোস্ট করেছেন রাহুল, তাতে রাহুলের কাছে পৌঁছতে অনড় অবস্থানে দেখা যায় মহিলাদের। এক প্রৌঢ়া রাস্তার পাশে বসেও পড়েন। কিন্তু কার্যতই টেনে হিঁচড়ে তাঁকে তুলে দেয় পুলিশ। শুধু তাই নয়, স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র কাঁধে ঝুলিয়ে মণিপুরবাসীকে রাহুলের কাছাকাছি আসা থেকে বিরত রাখতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। ভিডিও-র এক অংশে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উঁচিয়ে তেড়ে যেতেও দেখা যায় এক পুলিশ কর্মীকে। সেই সঙ্গে মুহুর্মুহু কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হতে থাকে।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi Convoy: মণিপুরে বাধার মুখে রাহুল! কনভয় আটকাল পুলিশ
এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাহুল। তিনি লেখেন, 'মণিপুরের ভাইবোনেদের কথা শুনতে এসেছিলাম আমি। এখানকার সব সম্প্রদায়ের মানুষজন অত্যন্ত স্নেহশীল। সকলে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, সরকার আমাকে আটকাচ্ছে। মণিপুরের সেরে ওঠা দরকার। এই মুহূর্তে শান্তিই আমাদের কাছে প্রাধান্য হয়ে ওঠা উচিত'।
যদিও রাহুলকে আটকানোর নেপথ্যে অন্য যুক্তি দিয়েছেন মণিপুরের বিষ্ণুপুরের এসপি হেইসনাম বলরাম সিংহ। তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ওঁর গাড়ি আাটকানো হয়। হেলিকপ্টারে চেপে চূড়াচন্দ্রপুর পৌঁছনোর পরামর্শ দিই ওঁকে। হাইওয়ে-তে গ্রেনেড হামলার ঝুঁকি রয়েছে, সেই রাস্তা দিয়েই এগনোর কথা VIP রাহুল গাঁধীর। ওঁর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই গাড়ি এগোতে দেওয়া হয়নি।”