নয়াদিল্লি : মণিপুরে হিংসার (Manipur Violence) জন্য তাঁকে বিভিন্ন সময়ে কাঠগোড়ায় তুলেছে বিরোধীরা। এবার উল্টে কংগ্রেসের ঘাড়ে দায় ঠেললেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। রাজ্যে শান্তি ফিরে এসেছে দাবি করে তার কৃতিত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। তাঁদের বক্তব্য শুনেই রাজ্যে শান্তি ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।


মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমরা সবসময় তাঁর উপদেশ নিয়ে চলি। সংসদে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অমিত শাহর বক্তব্য শোনার পর মণিপুরে এখন শান্তি আছে। গৃহহীন মানুষদের পুনর্বাসন এবং পুনরায় বসতি স্থাপনের এটা একটা রুটিন কাজ। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেশ শোনার জন্য এখানে এসেছি।" এদিকে মণিপুর হিংসা নিয়ে রাহুল গাঁধীর (Rahul Gandhi) মন্তব্যের কড় জবাব দেন এন বীরেন সিং। উপরন্তু, তাঁকে উপদেশ দেন, যদি তিনি (রাহুল গাঁধী) লাদাখে থাকেন, তাহলে লাদাখ নিয়েই কথা বলা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "লাদাখে থাকতে কী করে মণিপুরের কথা বলছেন রাহুল গাঁধী ? যদি লাদাখে থাকেন, তাহলে লাদাখ নিয়ে বলুন। আজ মণিপুর যা হচ্ছে, তা সব কংগ্রেসের সৃষ্টি। মানুষের জীবন নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।"


১৫ অগাস্ট লালকেল্লার মঞ্চ থেকে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভাষণে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর আর্জি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের পাশে দেশবাসী আছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, "গোটা দেশ মণিপুরের মানুষের সঙ্গে রয়েছে। সমস্ত বিবাদ মেটানোর একমাত্র পথ শান্তি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকার সব ধরনের চেষ্টা করছে।"


গত ৩ মে থেকে মণিপুরে শুরু হয়েছে হিংসা। প্রায় চার মাস হতে চলল। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি হল- মেইতি-অধ্যুষিত বিষ্ণুপুর, ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব ও কাকচিং এবং কুকি-জোমি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর ও কাঙ্গপোকপি এলাকা। জাতিগত হিংসায় বিধ্বস্ত মণিপুরে পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। গত ৩ মে থেকে এই রাজ্যে কুকি-জো-চিন ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এই পরিংসংখ্যান। পুলিশি এই ডেটা সম্প্রতি জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে।


এদিকে হিংসা শুরুর পর থেকে তা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে মণিপুরের অপর এক সম্প্রদায় নাগা। নাগা সম্প্রদায়ের বিধায়ক এবং নাগরিক সমাজ বরাবর বলে এসেছে, এই ইস্যুতে কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হলে আলাপ আলোচনা চালাতে হবে। তাছাড়া কুকি-জোমি অধ্যুষিত অঞ্চলে পৃথক প্রশাসনের ব্যবস্থা হলে যেন নাগা অধ্যুষিত এলাকায় প্রভাব না ফেলে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।