গুয়াহাটি: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানানো হয়েছিল ঢের আগেই। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, অশান্তি বেড়েই চলেছে মণিপুরে। শুক্রবার রাতে সরাসরি নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধল ভিড়ের (Manipur Situation)। ইম্ফলে রাতফর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে।  চূড়াচন্দ্রপুর জেলার বিষ্ণুপুর এবং কাঙবাইয়ে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালানোর অভিযোগও সামনে এসেছে এমনকি শনিবার ভোর পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ চলেছে, গুলির শব্দ শোনা গিয়েছে বলে পুলিশ এবং সেনা সূত্রে খবর (Manipur Violence)।


গত তিন দিন ধরে লাগাতার হিংসা, অশান্তির খবর আসছে ইম্ফল থেকে। শুক্রবার সন্ধেয় সেখানে র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে একটি দলের। সেখানে জনজাতি সম্প্রদায়ের অবসরপ্রাপ্ত এক IAS অফিসারের গুদামে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রাতভর জায়গায় জায়গায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।


সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাডভান্স হাসপাতালের কাছে প্যালেস কমপাউন্ডে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা হয়। প্রায় ১ হাজার জনের ভিড় জমা হয় সেখানে। ব্যাপক ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করা হয়। RAF এসে কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেয়। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে, রবারের বুলেট ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করা হয় ভিড়কে। তাতে বেশ কয়েক জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন।


শুক্রবার রাতে মণিপুর ইউনিভার্সিটির বাইরেও ভিড় জমা হয় বলে জানা গিয়েছে। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১০টা বেজে ৪০ মিনিট থোংজুর কাছে নাগাদ ২০০ থেকে ৩০০ জনের ভিড় জমা হয়েছিল। স্থানীয় বিজেপি বিধায়কের বাড়িতে ভাঙচুরের চেষ্টা চালানো হয়।  RAF ওই ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে সফল হয়। 


আরও পড়ুন: Manipur Violence: অরণ্যের অধিকার খর্ব, সংরক্ষণে রাজনৈতিক সমীকরণ, অভিযোগ একাধিক; ঠিক কী কারণে অগ্নিগর্ভ মণিপুর


এর পাশাপাশি, ইম্ফলের পশ্চিমে অবস্থিত ইরিংবাম থানা ভাঙচুরের চেষ্টাও হয়। রাত ১১টা বেজে ৪০ মিনিট নাগাদ ৩০০ থেকে ৪০০ জনের একটি ভিড় থানায় ঢোকার চেষ্টা করে। সেখানেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে RAF. মধ্যরাতের কিছু পরে আবার সিনজেমাইয়ে বিজেপি-র দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করা হয়। সেখানে সেনা সক্রিয় ভূমিকা পালন করে ভিড় হঠাতে। মণিপুরের বিজেপি সভাপতি অধিকরিমায়ুম সারদা দেবীর বাড়িতেও ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা হয়। সেনা এবং RAF যৌথ ভাবে হামলা প্রতিরোধ করে।


শুক্রবারের পর, শনিবার সকাল থেকে ইম্ফলে যৌথ ভাবে ফ্ল্যাগ মার্চ করছে সেনা, অসম রাইফেলস, RAF এবং রাজ্য পুলিশের বিশাল বাহিনী। এর আগে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরকে রঞ্জন সিংহের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পেট্রোল বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে সেবার। বুধবার আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী নেমচা কিপগেনের কোয়ার্টারেও। 


এখনও পর্যন্ত যে হিসেব মিলছে, সেই অনুযায়ী, মণিপুর হিংসা গত এক মাসে ১১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরছাড়া প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। মেইতেই সম্প্রদায়কে জনজাতি সংরক্ষণ দেওয়াকে ঘিরেই হিংসার সূত্রপাত।