নয়াদিল্লি: প্রায় তিন মাস হতে চলল জ্বলছে মণিপুর (Manipur Violence)। জাতিগত হিংসার ঘটনায় ছাড়খাড় উত্তর পূর্ব ভারতের পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা রাজ্যটি। কুকি ও মেইতেই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের কারণে ইতিমধ্যেই বহু প্রাণহানি হয়েছে। ঘরছাড়া বহু মানুষ।


পরিস্থিতি এতটাই দুর্বিষহ যে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের দেহ পরিবারের কাছে ফেরানোও যাচ্ছে না। কারণ, হিংসার কারণে বহু মানুষ তাঁদের বাড়িঘর ছেড়ে বা হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন দূরের কোনও শিবিরে। ফলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে মর্গে পড়ে থেকে পচে যাচ্ছে বহু দেহ, যেগুলি শনাক্তই করা যায়নি। 


এই পরিস্থিতিতে হিংসায় নিহতদের জন্য সহানুভূতি এবং সম্মানজনক পরিস্থিতির দাবি করা হয়েছে NFIW বা ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান উইম্যানের তরফে। মর্গে জমে থাকা অগুন্তি বেওয়ারিশ মৃতদেহের পরিচয় খুঁজে বের করা এবং যথাযোগ্য ভাবে অন্ত্যেষ্টি প্রক্রিয়ার কাজ সুষ্ঠুভাবে সমাধানের জন্য কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে।


ঠিকমতো ময়না-তদন্ত করার জন্য, পর্যাপ্ত ঠান্ডা ঘরের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি নিকট আত্মীয়রা যাতে দেহ নিতে আসতে পারেন, তার জন্য নিরাপদ পথে বের করার দাবিও জানানো হয়েছে। NFIW-এর দাবি, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের সম্মান প্রাপ্য, তাঁদের পরিবারের দেহ হাতে পাওয়ার এবং শোকজ্ঞাপন করার অধিকার রয়েছে। নিয়ম ও প্রথা মেনে পরিবারের মৃত সদস্যের অন্ত্যেষ্টি করার অধিকার রয়েছে এই পরিবারগুলির। 


চলতি বছরের মে মাস থেকে মণিপুরে যে হিংসার ঘটনা শুরু হয়েছে। তার জন্য গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাম মনোভাবাপন্ন সংগঠন NFIW. সংগঠনের তরফে সাধারণ সম্পাদক Annie Raja একটি চিঠি লিখেছেন। তাতে দাবি করা হয়েছে, 'একজন স্বনামধন্য এবং নিরপেক্ষ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞকে মাথায় বসিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হোক। যাঁরা এই দেহগুলির ময়না-তদন্ত করবেন। প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগেই এগুলি করা উচিত বলে দাবি NFIW-এর। 


কুকি ও মেইতেই -দের সংঘর্ষে দফায় দফায় উত্তপ্ত হচ্ছে মণিপুরের পরিস্থিতি। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে বারবার। অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়ানোর ছবিও সোস্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সম্প্রতি আরও একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, সেখানে দেখা গিয়েছে দুই বিবস্ত্র নারীকে বেঁধে হাঁটিয়ে নিয়ে আসছে বেশ কয়েকজন। তাদের পাশবিক শারীরিক অত্যাচার করার অভিযোগও উঠেছে। এই ভিডিও (Manipur Viral Video) নিয়ে ফের নতুন করে উত্তাল মণিপুর। দোষীদের কঠোর শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।


আরও পড়ুন: সরকারি চাকরি পেয়েই ঘুষে মন! ১০ হাজারের লোভে হাতেনাতে পাকড়াও