নয়াদিল্লি: কোভিডের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নয়া সিদ্ধান্ত নিল সরকার। সামান্য বা উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের জন্য হোম আইসোলেশনের নয়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। কী বলা হয়েছে নতুন সেই নির্দেশিকায় ?
রোগীদের জন্য নির্দেশ
১। পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে রোগীকে। নির্দিষ্ট ঘরের মধ্যেই থাকতে হবে তাঁকে। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিক ও কোমর্বিডিটি রয়েছে এরকম পরিবারের সদস্যদের থেকে দূরে থাকুন। কারও কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, হাইপারটেনশন ছাড়াও রেনাল ডিজিজ থাকলে তাদের থেকে দূরত্ব বাজায় রাখুন।
২। হোম আইসোলেশনে থাকাকালীন রোগীকে সর্বদা ত্রিস্তরীয় মেডিক্যাল মাস্ক পরে থাকতে হবে। প্রতি ৮ ঘণ্টা অন্তর বা তার আগে ভিজে গেলে এই মাস্ক বদলে ফেলতে হবে রোগীকে। 'কেয়ার গিভার' রোগীর ঘরে প্রবেশের আগেই দুজনকেই এন৯৫ মাস্ক পরতে হবে।
৩। রোগীকে হোম আইসোলেশনের সময় অবশ্যই আলো-বাতাস খেলে সেরকম ঘরে থাকতে হবে। ওই নির্দিষ্ট ঘরে সব সময় জানালা খোলা রাখতে হবে। যাতে সব সময় আলো-বাতাস আসে।
৪। রোগীদের মাস্ক বাতিল করার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। পরা মাস্ক ফেলে দেওয়ার আগে ১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে তাকে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৫। কোনও ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হলে সঙ্গে সঙ্গে 'ট্রিটিং ফিজিশিয়ান'-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
৬। করোনা হওয়ার আগে কোনও রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে সেই ওষুধগুলো চালিয়ে যেতে হবে।
৭। কোনও ধরনের উপসর্গ যেমন জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।
৮। নিয়ম করে দিনে ২ বার গরম জলে গার্গেল ও উষ্ণ গরম জলে ভাপ নেওয়াটা বাধ্যতামূলক।
৯। দিনে চারবার ৬৫০এমজি প্যারাসিটামল খেয়েও জ্বর না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনাকে স্টেরয়েডহীন ওষুধ দেবেন। উদাহরণ স্বরূপ সেই সময় ডাক্তাররা আপনাকে ন্যাপরোক্সেন ২৫০ এমজি দিনে দু'বার নিতে বলবেন।
১০। ৩-৫ দিন খালি পেটে ইভারমেকটিন ২০০এমসিজি নিতে হবে রোগীকে।
১১। কোনওভাবে ৫ দিন পর রোগীর জ্বর-কাশি না কমলে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে ইনহ্যালেশনাল বুডেসনাইড ৮০০এমসিজি দিনে দুবার করে ইনহেলারের মাধ্যমে ৫-৭ দিন রোগীকে নিতে হবে। এসবই হবে ডাক্তারের পরামর্শে।
১২। কোনওভাবেই হোম আইসোলেশনে থাকাকালীন রেমডেসিভির নেবেন না। এই ওষুধ নিতে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে কোনও হাসপাতালে নিতে হবে।
১৩। সামান্য কোভিডের ক্ষেত্রে স্টেরয়েড নেওয়া একদমই উচিত নয়। তবে জ্বর বা কাশি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে বা ৭দিনেও না কমলে কম মাত্রার ওরাল স্টেরয়েড নেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই কাজ করবেন না।
১৪। কোনও কারণে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। শ্বাসকষ্টের ক্ষেত্রে একদমই ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়। ট্রিটিং ফিজিশায়িনের তত্বাবধানে এই কাজ করতে হবে।
কাদের ধরা হবে উপসর্গহীন মাইল্ড কেস ?
১। এই ক্ষেত্রে ল্যাব কনফার্মড কেসকেই উপসর্গহীন ধরা হবে। অর্থাৎ যাদের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ অথচ উপসর্গ নেই তারাই এই মাইল্ড কেসের মধ্যে পড়বে। অবশ্যই এই রোগীদের ঘরের পরিবেশে অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ৯৪ শতাংশের বেশি থাকতে হবে।
২। যেসব রোগীর জ্বর বা শ্বাসকষ্ট নেই, এমনকী ঘরের তাপমাত্রায় অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ৯৪ শতাংশের বেশি তাদেরও মাইল্ড কোভিড রোগী ধরা হবে।