নয়াদিল্লি : হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হলেই তিনি সবক শেখাবেন বাংলাদেশকে। এমনটাই আশা ছিল বেশিরভাগের। প্রেসিডেন্ট ইলেকশনের আগেই বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, সে-দেশ সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর ক্রমবর্ধমান নির্যাতনের বিষয়টিকে তিনি মোটেও ভাল চোখে দেখছেন না। তিনি ক্ষমতায় থাকলে এই পরিস্থিতি হতে দিতেন না। তাই অনেকেই আশা করেছিলেন, বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি বদলাতে বড় ভূমিকা নিতে পারে হোয়াইট হাউস। 


তবে আপাতত বাংলাদেশের বিষয়টি 'বন্ধু মোদি'র উপরই ছাড়লেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ।  ওয়াশিংটনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি।  সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়বে ভারত ও আমেরিকা, বার্তাই দেওয়া হয় দু'দেশের তরফেই। এই আলোচনার মাঝেই এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশ নিয়ে এই মুহূর্তে আমেরিকা কিছু পদক্ষেপ করবে কি না, তাই নিয়ে। বাংলাদেশের বিষয়টি মোদি-ট্রাম্পের আলোচনায় জায়গা করে নেবে এমনটাই ধারণা ছিল কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। 


তবে এই মুহূর্তে হোয়াইট হাউস বাংলাদেশের বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ নাও করতে পারে বলেই ইঙ্গিত মিলল ট্রাম্পের কথায়। ট্রাম্প জানিয়ে দেন, আমেরিকা বাংলাদেশের সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নয়।  বাংলাদেশের বিষয়টা তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির উপরই ছাড়ছেন । 'বাংলাদেশের সমস্যা সমাধান করার বিষয়টা আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির ওপরই ছেড়ে দিলাম। '


ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশে যা ঘটে চলেছে, ট্রাম্পের কাছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিদেশসচিব জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ঘটে চলা সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ভারত কীভাবে দেখছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হোয়াইট হাউসে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ সচিব বলেন, ভারত আশাবাদী বাংলাদেশ সেপথেই এগোবে, যাতে ভারত তার সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে। 


ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে পা রেখে প্রথমেই  বাংলাদেশকে সমস্ত সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা করেন। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার ঢাকার ওপর চাপ বাড়ায় আমেরিকা । বাংলাদেশের সব খাতে আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দেয় হোয়াইট হাউস। বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কয়েকশো কোটি টাকা সাহায্য করে আমেরিকা। স্বাভাবিকভাবেই এর ফলে চাপ বাড়ে ইউনূস সরকারের উপর। এছাড়া  বাংলাদেশে পরিবেশ, শিক্ষা, কৃষকদের জন্য রোজগারে বিপুল অর্থসাহায্য করত আমেরিকা। সেই সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন ট্রাম্প। 


ওয়াশিংটনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমখি হয়ে শুরুতেই একে অপরের প্রশংসায় ভরিয়ে দেন মোদি-ট্রাম্প। মোদি প্রশংসার সুরে বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর একটি বিষয়ে খুব মিল। দুজনেই আমাদের দেশকে সবার আগে গুরুত্ব দেন। ওদিকে আবার ' মিত্র মোদি'র প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, ভারতে দারুণ কাজ করছেন মোদি।