নয়াদিল্লি: রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সংস্থা বিজেপি-র অভিভাবক সংস্থা হিসেবেই পরিচিত। নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত থেকে নেতৃত্ব বাছাই, সবেতেই তাদের প্রভাব থাকে বলেই জানেন সকলে। কিন্তু সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত এই ধারণা খারিজ করে দিলেন। তাঁর দাবি, বিজেপি একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। তাঁদের মধ্য়ে পরামর্শ আদানপ্রদান হলেও, এক পক্ষের হয়ে অন্য পক্ষ কখনওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না। (RSS-BJP News)

বৃহস্পতিবার দিল্লিতে একটি সাংবাদিক বৈঠকে এমন দাবি করেন ভাগবত। বিজেপি সভাপতি নির্বাচন থেকে পথনির্দেশনা তৈরিতে RSS-এর ভূমিকা কী, জানতে চাওয়া হয়। জবাবে ভাগবত বলেন, "সব কিছু সঙ্ঘ ঠিক করে দেয় বলে যে ধারণা রয়েছে, তা ভুল। এত বছরের সংগঠন, আমি নিজে ৫০ বছর ধরে শাখা চালাচ্ছি, শাখার ব্যাপারে আমি বিশেষজ্ঞ। যারা সরকার চালাচ্ছে, তারা সেব্যাপারে। কোন ক্ষেত্রে কার কত জ্ঞান, তা আমরা জানি। পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ওদেরই। (রাজনীতি) ওই ক্ষেত্রে ওদের সিদ্ধান্ত, এক্ষেত্রে আমাদের।" (Mohan Bhagwat)

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি নির্বাচন ঘিরে এই মুহূর্তে দোলাচল চলছে। সঙ্ঘ ও দলীয় নেতৃত্বের মতের মিল হচ্ছে না বলে উঠে আসছে খবর। সেই নিয়ে কোনও প্রশ্ন না করা হলেও, ভাগবত নিজেই রসিকতার সুরে বলেন, "আমরা করলে কি এত সময় লাগত? যত ইচ্ছে সময় নিন। আমাদের কিছু বলার নেই।"

সঙ্ঘ ও বিজেপি-র মধ্যা পার্থক্য কী জানতে চাইলে ভাগবত বলেন, "আমাদের সঙ্গে প্রত্যেক সরকারেরই সম্পর্ক ভাল। রাজ্য, কেন্দ্র সকলের সঙ্গে। শুধুমাত্র এই সরকারের সঙ্গেই নয়। অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে কিছু মতপার্থক্য হয় বইকি। কিন্তু বিবাদ নেই। মতবিরোধ ঘটলেও ঝগড়া নেই। চেয়ারে যিনি আছেন, তিনি ১০০ শতাংশ আমাদের লোক হলেও, কতটা করতে পারবেন, কতটা পারবেন না, সেই স্বাধীনতা তাঁকে দিতে হবে। মতবিরোধ থাকলে তবেই উন্নতি সম্ভব। আমরা একটা সিস্টেমের মধ্যে রয়েছি। শ্রমিক সংগঠন, দল এবং সরকার, সবসম একমত হয় না। তখন আপসের কথা বলা হয়। প্রত্যেকে আপসে রাজি হয় না। প্রশ্ন ওঠে, আমরা কেন আপস করব? আপসের কথা উঠলে সমস্যা বাড়ে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে এগোতে হয়। তাই বাইরে থেকে ঝগড়া মনে হলেও, লক্ষ্য একই, দেশের মঙ্গল।"

এই বোঝাপড়ার দরুণই সমন্বয় বজায় রয়েছে বলে জানান ভাগবত। তাঁর দাবি, অনেক সময় তাঁদের মত মেলে না। কোনও সিদ্ধান্ত হয়ত তাঁরও মতের বিরুদ্ধে যায়। কিন্তু সর্বসম্মতিতে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, তা-ই মেনে চলেন সকলে।