ত্রিপোলি: কোথায় গিয়ে থামবে সংখ্যাটা? সরকারি অনুমান যদি ঠিক হয়, তা হলে বিধ্বংসী বন্যায় লিবিয়ার (Libya Flood) অন্তত ১১ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে আশঙ্কা। নিশ্চিত ভাবে দেখতে গেলে, মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১ হাজার। কিন্তু আরও হাজার দশেকের খোঁজ নেই। জলভাসি বন্দরশহর 'দেরনা'-র কোথায় রয়েছেন তাঁরা, কী ভাবে রয়েছেন, কিছুই জানতে পারেনি প্রশাসন। তবে মৃত্যুমিছিল যাতে আর না লম্বা হয় তাই আপাতত বন্যাবিধ্বস্ত দেরনা-য় সাধারণ নাগরিকের প্রবেশাধিকার বন্ধ করল লিবিয়া সরকার। শুধুমাত্র উদ্ধারকর্মী ও ত্রাণের কাজে থাকা কর্মীরাই সেখানে যেতে পারবেন।


'প্রলয়ের' ছবি...
চিৎপাত হয়ে পড়ে রয়েছে একটা গাড়ি। বা বলা ভাল গাড়ির কঙ্কাল। ভেঙে পড়া বহুতলের ছিন্নবিচ্ছিন্ন কাঠামো যেন গাড়িটিকে থেঁতলে দিয়েছে। বন্যাবিধ্বস্ত দেরনা শহরের ছবি এখন এমনই। আর মানুষের অবস্থা? রাস্তায় জমা জলে ফুলে ঢোল হয়ে যাওয়া দেহ থিকথিক করছে। কখনও আবার কিছু দেহ সৈকতের দিকে ভেসে যাচ্ছে, আবার ফিরে আসছে। বহু দেশ ধ্বংসস্তূপের তলায়। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, মাত্র ২ ঘণ্টায় অন্তত দুশোটি দেহের খোঁজ পেয়েছেন তিনি। একনজরে দেখলে মনে হবে, জলের প্রচণ্ড তাণ্ডবে নয়ছয় হয়ে গিয়েছে লিবিয়ার এই শহর। 
তবে এই পরিস্থিতিতেও শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস যৌথ ভাবে লিবিয়ার বাসিন্দাদের কাছে আর্জি জানায়, বিপর্যয় মোকাবিলা করতে গিয়ে তাঁরা যেন গণসমাধির পথে না হাঁটেন। এই নিয়ে এদিন একটি বিবৃতিও জারি করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, 'দুর্গতির মুখে হয়তো অনেকেই দ্রুত গণসমাধির কথা ভাববেন। দেহগুলি থেকে বাকিদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, এই আশঙ্কাও করতে পারেন অনেকে। কিন্তু গণসমাধি আখেরে সকলের পক্ষেই বিপজ্জনক। স্থানীয় প্রশাসনের উপর এই নিয়ে তীব্র চাপ থাকবেই, তবে নিহতদের সমাধিস্থ করার ব্যাপারে গাফিলতি হলে তাঁদের পরিজনদের যন্ত্রণা আরও বাড়বে। সামাজিক ও আইনি সমস্যা তো রয়েছেই।'
বস্তুত বন্যার ভয়াবহতার পর থেকে এমনিতেই তীব্র চাপে রয়েছে লিবিয়ার সরকার। নাগরিকদের ক্ষোভ, বন্যার আগে স্পষ্ট করে ওই এলাকা থেকে সরে যাওয়ার কোনও সরকারি নির্দেশ দেওয়া হয়নি। লিবিয়ার বহু মানুষ ইতিমধ্যেই এই নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত চাইছেন। তবে আপাতত জীবনের ছন্দে ফেরাই মূল লক্ষ্য দেরনা-র।


আরও পড়ুন:মেয়াদ শেষ সঞ্জয় কুমার মিশ্রের, ইডি-র ইন-চার্জ ডিরেক্টর বর্ষীয়ান IRS অফিসার রাহুল নবীন