নয়াদিল্লি: বাণিজ্যশুল্ক নিয়ে টানাপোড়েনে দূরত্ব বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বন্ধুত্ব অক্ষুণ্ণ থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ডাকে এবার সাড়া দিলেন মোদিও। জানালেন, একই অনুভূতি তাঁর। ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে চিরকাল সুসম্পর্ক বজায় থাকবে বলে জানালেন তিনি। তাসত্ত্বেও আমেরিকায় রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনে বক্তৃতা করতে যাচ্ছেন না মোদি। পাঠাচ্ছেন বিদেশমন্ত্রীকে। (Donald Trump)
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি করা থেকে, রাশিয়ার থেকে তেল কেনায় ভারতের ঘাড়ে চড়া হারে শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত, গত কয়েক মাসে ভারতও আমেরিকার মধ্যে টানাপোড়েন চরমে পৌঁছেছে। সহযোগীরা তো বটেই, ট্রাম্প নিজেও ভারতকে নিয়ে কড়া কথা বলেছেন। এমনকি মোদির চিন সফর নিয়েও সম্প্রতি টিপ্পনি করেন তিনি। (Narendra Modi)
কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের প্রতি ট্রাম্পের সুর নরমই। বরং মোদির সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সমীকরণও তুলে ধরেছেন প্রকাশ্য়ে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “চিরকাল মোদির বন্ধু থাকব আমি। উনি মহান প্রধানমন্ত্রী। ভারত এবং আমেরিকার সম্পর্ক বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। মোদির সঙ্গে আমার ভাল বোঝাপড়া। কয়েক মাস আগেই এসেছিলেন। গোলাপ বাগানে, ভিজে ঘাসের উপর হেঁটেও বেড়াই।”কিন্তু মোদির কিছু পদক্ষেপ যে তাঁর মনঃপুত হয়নি, তা নিয়ে কোনও রাখঢাক করেননি ট্রাম্প। তাঁর কথায়, "এই মুহূর্তে ওঁর কিছু কাজ আমার ভাল লাগছে না। তবে ভারত এবং আমেরিকার মধ্য়ে বিশেষ বোঝাপড়া রয়েছে।"
ট্রাম্প এই মন্তব্য করার পরই তাঁকে পাল্টা বন্ধুত্বের বার্তা পাঠান মোদি। সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, 'আমাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যে অনুভূতি এবং ইতিবাচক অবস্থা, তার জন্য অত্যন্ত ধন্যবাদ এবং সম্পূর্ণ ভাবে সাড়া দিচ্ছি। ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে যে কৌশলগত বোঝাপড়া রয়েছে, তা ইতিবাচক, ভবিষ্যৎমুখী, ব্যাপক'।
তবে ট্রাম্পের বন্ধুত্ব-বার্তায় সাড়া দিলেও, চলতি মাসের শেষে আমেরিকায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় মোদি যাচ্ছেন না। ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সাধারণ সভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে তর্ক-বিতর্ক। ২৩ সেপ্টেম্বর সেখানে বক্তৃতা করবেন ট্রাম্প। ইজরায়েল, চিন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভারতের রাষ্ট্রনেতারও সেখানে বক্তৃতা করার কথা ছিল। ২৬ সেপ্টেম্বর মোদি ভাষণ দেবেন বলে ঠিক ছিল এতদিন। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, মোদির পরিবর্তে সেখানে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ২৭ সেপ্টেম্বর বক্তৃতা করবেন তিনি।
চিনে আয়োজিত শাংহাই সম্মেলনে মোদিকে শি জিনপিংয়ের পাশে দেখে সম্প্রতি স্বগতোক্তি করতে দেখা যায় ট্রাম্পকে। সেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিও ভাল ভাবে গ্রহণ করেননি তিনি। চিনের কাছে মোদি এবং পুতিনকে হারিয়ে ফেললেন বলে আফশোসের সুরও শোনা যায় গলায়। তবে এখন তাঁর গলায় অন্য সুর। সেই নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, "মনে হয় না ভারতকে হারিয়ে ফেলেছি। রাশিয়ার থেকে ওরা এত তেল কেনায় আমি খুব অসন্তুষ্ট। ওদের সেকথা জানিয়েওছি। তাই ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছি ওদের উপর, ৫০ শতাংশ।"