কলকাতা: রানাঘাটে নরেন্দ্র মোদি অডিও বার্তাও শুরু করলেন মহাপ্রভুকে স্মরণ করে। কিন্তু, অনেকেই আশা করেছিলেন, শনিবার মতুয়া অধ্যুষিত রানাঘাটের সভা থেকে মতুয়াদের ভোটাধিকার, নাগরিকত্ব সংক্রান্ত প্রশ্নের উদ্বেগ ঘোচাতে বার্তা দেবেন তিনি। মতুয়াদের এই ক্ষোভকে হাতিয়ার করে যখন সুর চড়াচ্ছে বিজেপি-বিরোধীরা, তখন শনিবার সন্ধেয় নরেন্দ্র মোদি এক্স হ্য়ান্ডলে লেখেন, আমি প্রত্যেক মতুয়া ও নমঃশূদ্র পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যে আমরা সর্বদা তাঁদের পাশে থাকব।

Continues below advertisement

সভা ছিল নদিয়া জেলায়। নরেন্দ্র মোদি অডিও বার্তাও শুরু করলেন মহাপ্রভুকে স্মরণ করেই। কিন্তু, সভায় আসা মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্তদের অনেকেই দাবি করলেন, তাঁরা যে প্রশ্নের উত্তর শোনার আশায় এসেছিলেন, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছুই বলেননি। 

SIR-এ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকে মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত বহু মানুষের মধ্য়ে ঘোর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে বহু ভোটারের নাম ‘আনম্যাপড’ থাকায় তাঁদের ভোটাধিকার নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে । পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ‘আনম্যাপড’ ভোটারদের বড় অংশই মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। যাঁরা ২০০২ সালের পর বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। এই মানুষগুলির আশঙ্কা,  শেষ অবধি কি SIR-এর জেরে ভোটাধিকার হারাতে হবে? SIR-এ চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় কি তাদের নাম বাদই পড়বে? অনেকে আশা করেছিলেন, শনিবার মতুয়া অধ্যুষিত রাণাঘাটের সভা থেকে মতুয়াদের প্রশ্নের উদ্বেগ ঘোচাতে বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

Continues below advertisement

তবে এদিন এক্স পোস্টে মোদি বলেন, 'আমি প্রত্যেক মতুয়া ও নমঃশূদ্র পরিবারকে আশ্বাস দিচ্ছি যে আমরা সর্বদা তাদের সেবা করব। তারা তৃণমূল কংগ্রেসের দয়ার উপর নির্ভরশীল নয়। আমাদের সরকার কর্তৃক আনা সিএএ-এর কারণে ভারতে সম্মানের সাথে বসবাস করার অধিকার তাদের আছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার শপথ গ্রহণ করার পর আমরা মতুয়া ও নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের জন্য আরও অনেক কিছু করব।' 

এদিকে,  অডিও বার্তায় নরেন্দ্র মোদির মুখে হরিচাঁদ ঠাকুর থেকে বড়মার কথা শোনা গেলেও, মতুয়াদের প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। 

এদিকে, মতুয়াদের এই ক্ষোভকেই হাতিয়ার করেছে বিজেপি-বিরোধীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ, 'এই SIR-এর হঠকারিতা..বিজেপি যেভাবে মানুষের নাম বাদ দেওয়ার দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে হঠকারী পদক্ষেপ SIR নিয়ে নিয়েছিল। তাতে এই যে মতুয়া সম্প্রদায় বিজেপি মুখে বলছিল, CAA দিয়ে করে দেব। আমরা বলছিলাম কোনও নোটিফিকেশন তো নেই। প্রসেস তো চালু হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, আগে নাগরিকত্ব পরে ভোটার। ফলে মতুয়া সম্প্রদায় খুব সমস্যার মধ্যে পড়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী একটি শব্দ বললেন না।' 

মতুয়াদের ক্ষোভের প্রতিফলন কি ছাব্বিশের ভোটবাক্সে পড়বে? তাতে কার ক্ষতি, আর কার লাভ? সেই নিয়েই এখন চর্চা চলছে বিভিন্ন মহলে।