নয়াদিল্লি: সীমান্ত সন্ত্রাস নিয়ে বার বার সরব হয়েছে ভারত। জোগানো হয়েছে তথ্যপ্রমাণও। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যতবারই কড়া পদক্ষেপের আর্জি জমা পড়েছে,  ঢাল হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছে চিন। এবার কি সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিন সফর ঘিরে সেই প্রশ্ন আরও জোরাল হচ্ছে। (India-China Relations)

আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক নিয়ে সংঘাত চলছে ভারতের। সেই আবহে মোদির চিন সফর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রবিবার চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন মোদি। সেখানে পারস্পরিক সহযোগিতা, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উপর জোর দেন দুই রাষ্ট্রনেতাই। ‘ভাল প্রতিবেশী হয়ে উঠতে হবে’ বলে বার্তা দেন জিনপিংও। (Narendra Modi Xi Jinping Meet)

কিন্তু সীমান্ত সন্ত্রাসের প্রশ্নে পাকিস্তানের প্রতি কি কড়া মনোভাব দেখাবে চিন? ভারতের জাতীয় অখণ্ডতার প্রশ্নে কি প্রতিবেশীর ধর্ম পালন করবে তারা? দেশের অন্দরে এই প্রশ্ন যখন জোরাল হচ্ছে, সেই সময় মুখ খুলেছেন দেশের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি। তিনি জানিয়েছেন, জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে সীমান্ত সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ তুলেছেন মোদি। চিনও ভারতের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে।

মোদি-জিনপিং সাক্ষাৎ নিয়ে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন বিক্রম। তিনি বলেন, “সীমান্ত সন্ত্রাসকে প্রাধান্য দিয়ে এদিন বিষয়টি উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত এবং চিন, দুই দেশই এব্যাপারে ভুক্তভোগী। তাই দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। এ নিয়ে পরস্পরের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হওয়া জরুরি, পারস্পরিক সহযোগিতা জরুরি, যাতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়। এ নিয়ে চিনের তরফে সহযোগিতার আশ্বাস মিলেছে।”

জিনপিংয়ের সঙ্গে মোদির এই সাক্ষাৎ নিয়ে দেশের অন্দরে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গালওয়ান উপত্যকায় চিনা বাহিনীর হাতে যে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের প্রাণ যায়, যেভাবে আগ্রাসন দেখিয়ে ভারতের ভূখণ্ড দখল করছে চিন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন যেভাবে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে তথ্য জুগিয়ে সাহায্য় করেছে তারা, তাতে জিনপিংয়ের সঙ্গে মোদি হাত মেলালেন কী করে, প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। পহেলগাঁওয় হামলা নিয়েও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও বিরূপ মন্তব্য করেনি চিন। তাই চিনের সঙ্গে সখ্য কতটা কার্যকর হবে, উঠছে সেই প্রশ্নও। সেই আবহেই কেন্দ্র জানাল, জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে সীমান্ত সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলেন মোদি।

রাশিয়ার থেকে তেল কেনার ‘শাস্তি’ হিসেবে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিনও রাশিয়ার থেকে তেল কেনে, কিন্তু তাদের প্রতি সুর নরম চিনের। সেই নিয়ে কোনও কথা হয়েছি কি না, জানতে চাওয়া হয়। বিক্রম জানিয়েছেন, বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে মোদি ও জিনপিংয়ের মধ্যে। বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে পারস্পরিক সহযোগিতার উপর জোর দিচ্ছে দুই দেশই।