এর বিরুদ্ধে আজ নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কাছে দরবার করে অগপ প্রতিনিধিদল। অগপ সভাপতি তথা অসমের মন্ত্রী অতুল বোরা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিলটি পাশ না করাতে কেন্দ্রকে বোঝানোর একটা শেষ চেষ্টা করি আজ। কিন্তু রাজনাথ স্পষ্ট বলে দেন, কাল লোকসভায় বিলটি পাশ হবে। এরপর আর জোটে থাকার কোনও মানে হয় না। অগপ শীর্ষনেতা তথা অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল কুমারর মহন্ত আগেই জানিয়েছিলেন, লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৬ গৃহীত হলে অগপ রাজ্যে বিজেপি সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেবে।
১২৬ সদস্যের অসম বিধানসভায় অগপ-র বিধায়ক ১৪ জন। বিজেপির শক্তি ৬১। বোডোল্যান্ড পিপলস ফ্রন্টের ১২ জন, এক নির্দল বিধায়কের সমর্থন আছে তাদের। অপরদিকে বিরোধী কংগ্রেস ও এআইউডিএফের সদস্য যথাক্রমে ২৫ ও ১৩। ফলে অগপর সিদ্ধান্তে বিজেপি সরকারের পতনের আশঙ্কা নেই।
বিলের বিরোধিতায় সরব অসমের নানা মহল, সংগঠন। বিলটি পাশ করে বাইরে থেকে সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হলে তাদের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য বিপন্ন হবে বলে দাবি উত্তরপূর্ব ভারতের নানা সংগঠনের। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম ও আরও কয়েকটি সংগঠন বিলের তীব্র আপত্তি করে জানিয়ে দিয়েছে, ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে নাগরিকত্ব দেওয়া যাবে না, এটা অসাংবিধানিক।
এদিকে অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা আজও বিতর্ক বাঁধিয়েছেন। গতকাল তিনি বলেছিলেন, বিলটি গৃহীত না হলে অসম ‘জিন্নার পথে যাবে’। কিছু লোক প্রতিক্রিয়াশীল অবস্থান নিয়ে বিলের বিরোধিতা করছে, বুদ্ধিজীবীরাও বিল সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করছেন। বিলটি পাশ না হলে আমরা জিন্নার দর্শনের সামনে মাথা নত করব। ওই লোকগুলি না থাকলে সরভোগ কেন্দ্রটা জিন্নারা পাবে। আমরা কি তা চাই? এটা জিন্নার আর ভারতীয় দর্শনের লড়াই।
ঘটনাচক্রে বরপেটা জেলার বিধানসভা কেন্দ্র সরভোগ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত কুমার দাশ।
আজ হিমন্ত বলেন, বিলটি পাশ না হলে অসমে আগামী ৫ বছরে হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যাবে। যারা অসমকে আরেকটা কাশ্মীর বানিয়ে সেখানে অনিশ্চয়তা তৈরি করতে চাইছে, এতে তাদের সুবিধা হবে।
তবে বিতর্ক হলেও জিন্না সংক্রান্ত মন্তব্যে অনড় হিমন্ত অভিযোগ করেন, যারা তাঁর বিরোধিতা করছেন, তাঁরা অসম ও দেশভাগের সময় তার গঠনের ইতিহাস জানেন না। কিন্তু ওয়াকিবহাল লোকজন জানেন, মুসলিম লিগ অসমকে পাকিস্তানে সামিল করাতে চেয়েছিল, কিন্তু তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী গোপীনাথ বরদলৈ ও কংগ্রেস নেতৃত্ব তাদের চেষ্টা ভেস্তে দিয়েছিলেন। শুধু মুসলিম লিগই নয়, সেসময় অসমের ভিতর থেকে কিছু অংশও সেসময় রাজ্যকে পাকিস্তানের অংশ করতে চেয়েছিল। সেইসব লোক এখনও আছে।