নয়াদিল্লি: অমরনাথ যাত্রীদের ওপর সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেছিলেন রাহুল গাঁধী। বেশ কয়েকটি ট্যুইটে কংগ্রেস সহ সভাপতি প্রধানমন্তীকে সরাসরি কাঠগড়ায় তুলে লেখেন, নিরাপত্তায় এমন ভয়াবহ গলদ মেনে নেওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রীর উচিত এর দায় নিয়ে ভবিষ্যতে আর এমন না হতে দেওয়া। এ ধরনের সন্ত্রাসবাদী কাপুরুষরা কখনই দমিয়ে রাখতে পারবে না।

পাল্টা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে রাহুলকে রাজনীতি না করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, রাজনীতি করার অনেক সুযোগ পাবেন আপনি, কিন্তু দয়া করে আজকের পরিস্থিতিটা বুঝুন। আপনি একটা দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমি আশা করব, উনি ওঁর নিজের দলের ইতিহাস ঘেঁটে দেখবেন। উনি দেখতে পারবেন, কীভাবে এ ধরনের পরিস্থিতিতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছিল। মোদী সরকারের সন্ত্রাস মোকাবিলায় দৃঢ় সদিচ্ছা আছে, গতকালের হামলার দোষীরা সাজা পাবে বলে জানান তিনি।

রবিশংকর এও বলেন, আজ সেই পরিস্থিতি এসেছে যখন গোটা দেশকে এক সুরে কথা বলতে হবে, সারা দেশ সন্ত্রাসবাদী হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।

কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও অভিযোগ করেন, সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে গুরুতর গাফিলতি ছিল। যে বাসে গুলি চলেছে, সেটি অমরনাথ শ্রাইন বোর্ডের নথিভূক্ত ছিল না, সন্ধ্যার নির্ধারিত সময়সীমার পরও সুরক্ষা ছাড়াই সেটি যাচ্ছিল। এইসব গাফিলতির ছিদ্র দিয়েই সন্ত্রাসবাদীরা হামলার সুযোগ পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে এর জবাব দিতে হবে।

বিরোধীরা তো বটেই, কেন্দ্রের শাসক শিবিরের ভিতর থেকেও শোনা যাচ্ছে সমালোচনার সুর। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষ নেতা প্রবীণ টোগাড়িয়ার যেমন অভিযোগ, তিন বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের অবসান ঘটাতে কেন্দ্রের ব্যর্থতা থেকেই এই হামলা। তবে জম্মু ও কাশ্মীরের মেহবুবা মুফতির জোট সরকারকে সন্ত্রাসবাদের সমর্থক আখ্যা দিয়ে তাদের বরখাস্ত করার ডাক দেন তিনি।

টোগাড়িয়ার খেদ, বারবার প্রমাণিত হিন্দুরা নিরাপদে অমরনাথ যাত্রা করতে পারেন না। এই সরকার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আমি জানতে চাই, বিজেপি কোন বাধ্যবাধকতায় মেহবুবাকে সহ্য করে চলেছে।

পাশাপাশি শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেন, এটা শুধু অমরনাথ যাত্রা নয়, গোটা দেশ ও কেন্দ্রের সরকারের ওপর হামলা। শুধু এর নিন্দা করলেই হবে না, এটাই সন্ত্রাসবাদী হামলার মুখের মতো জবাব দেওয়ার দারুণ সময়। তিনি একইসঙ্গে বলেন, গতকালের হামলায় নতুন করে প্রমাণ হল, প্রতিবেশী দেশের মাটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়, নোট বাতিল করে কোনও ফল মেলেনি। পাকিস্তান ও তার সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ মোকাবিলায় উদ্ভূত সমস্যা পাকাপাকি সমাধান চাই।

রাউথ এও জানান, ১৯৯৬ সালেও অমরনাথ যাত্রার সামনে এরকমই বিপদ খাড়া হয়েছিল, কিন্তু প্রয়াত শিবসেনা সুপ্রিমো বাল ঠাকরে নিশ্চিত করেছিলেন, একটি মানুষও মরবে না। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন, অমরনাথ যাত্রীদের ওপর একটিমাত্র হামলা হলেই দেশের কোনও জায়গা থেকেই হজযাত্রীদের একটিও বিমান যাতে রওনা দিতে না পারে, তা সুনিশ্চিত করবে শিবসেনা।