নয়াদিল্লি: পাঠ্যবইয়ে কাটছাঁট করা নিয়ে ফের বিতর্কের মুখে। সেই আবহে মুখ খুলল ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (NCERT). দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ে অযোধ্যা বিবাদের ইতিহাসে কাটছাঁট করা নিয়ে সাফাই দিল তারা। NCERT-র যুক্তি, ঘৃণা এবং হিংসা শিক্ষার বিষয়বস্তু হতে পারে না। পাঠ্যবইয়ে সেগুলিকে গুরুত্ব না দেওয়াই শ্রেয়। (NCERT Rewrites Ayodhya Dispute)
সম্প্রতি দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ের নয়া সংস্করণ প্রকাশ করেছে NCERT. আর সেই বই সামনে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ অযোধ্যা বিবাদ নিয়ে যে অধ্যায় ছিল আগে, চারপাতার সেই অধ্যায়কে কেটেছেঁটে দু'পাতায় নামিয়ে আনা হয়েছে। পাশাপাশি, বাবরি মসজিদের নামই উল্লেখ করা হয়নি কোথাও। আগাগোড়া বাবরি মসজিদের পরিবর্তে 'তিন গম্বুজ সম্বলিত নির্মাণ' লেখা হয়েছে। (NCERT Textbook Revised Again)
সেই নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই সাফাই দিতে এগিয়ে এসেছে NCERT. সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংস্থার ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি শিক্ষার গৈরিকিকরণের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রতি বছর পাঠ্যক্রমে যে রদবদল ঘটানো হয়, সাম্প্রতিক কাটছাঁটও তার অঙ্গ বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মুছে গেল বাবরি মসজিদের নাম, বদলে গেল অযোধ্যার ইতিহাস, পাঠ্যবই সংশোধন করে ফের বিতর্কে NCERT
কিন্তু বেছে বেছে বিজেপি-র রথযাত্রা, করসেবকদের উন্মাদনা, বাবরি মসজিদ ভেঙে দেওয়ার ঘটনা, মুখ্যমন্ত্রীর দোষী সাব্যস্ত হওয়াকে কেন বাদ দেওয়া হল, জানতে চাওয়া হলে দীনেশ বলেন, "পড়ুয়াদের এমন কিছু পড়ানো উচিত কি, যা সমাজে ঘৃণার সঞ্চার করে? শিক্ষার উদ্দেশ্য কি তাই? ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কি দাঙ্গার বিষয়ে পড়ানো উচিত? বড় হয়ে নিজে থেকেই জানতে পারবে। স্কুলের পাঠ্যবইতে কেন রাখতে হবে? কেন ঘটেছিল,কী ঘটেছিল, বড় হলে নিজেরাই বুঝতে পারবে। এই সব সমালোচনা, প্রতিবাদ অর্থহীন।"
শিক্ষার গৈরিকীকরণের অভিযোগ উড়িয়ে দীনেশ বলেন, "প্রাসঙ্গিকতা না থাকলে, বিষয় পাল্টে ফেলাই দস্তুর। কেন পাল্টানো যাবে না? কোনও গৈরিকীকরণ দেখছি না আমি। আমরা ইতিহাস পড়াই, যাতে পড়ুয়ারা জ্ঞান অর্জন করে। যুদ্ধক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য নয়।" যদিও বাবরি মসজিদ ধ্বংস নিয়ে অটলবিহারি বাজপেয়ীর আক্ষেপ এবং সমালোচনা মূলক কোনও উক্তি রাখা হয়নি বইয়ের নয়া সংস্করণে। তবে কোনও প্রশ্নেই আমল দিতে নারাজ NCERT. CBSE বোর্ডের প্রায় ৩০ হাজার স্কুল তাদের বই পড়ায়।