নয়াদিল্লি: দেশের মানুষের জীবন-মরণ যাঁদের হাতে, সেই চিকিৎসক হওয়ার পরীক্ষা নিয়েই এবার বিতর্ক। ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় অনিয়ম এবং দুর্নীতি নিয়ে ভূরি ভূরি অভিযোগ সামনে এল। দেশের সুপ্রিম কোর্টে এ নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে, যা নিয়ে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সিকে নোটিসও ধরাল শীর্ষ আদালত।  এই NEET পরীক্ষার মাধ্যমেই ভবিষ্যতের চিকিৎসকদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হয়। যোগ্যতম পরীক্ষার্থীরা আগামী দিনে মানুষের জীবন বাঁচানোর দায়িত্ব নেন। তাই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কিন্তু ঠিক কোথায় গলদ দেখা গিয়েছে, সরকারের তরফে কী সাফাই দেওয়া হয়েছে, দেখে নেওয়া যাক একনজরে। (NEET Result Controversy)


এবছর NEET পরীক্ষা নিয়ে গোড়া থেকেই বিতর্ক। প্রশ্নফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আগেই। NEET পরীক্ষার ফলাফল সামনে আসতে, আরও সরগরম হয়ে ওঠে পরিবেশ। কারণ পরীক্ষার্থীদের কয়েক জনের প্রাপ্ত নম্বর অস্বাভাবিক ঠেকে যেমন, তেমনই হিসেব নিকেশেও অসঙ্গতি ধরা পড়ে। এবারের NEET-এ মোট ৬৭ জন শীর্ষ স্থান অধিকার করেন। অর্থাৎ ৭২০ নম্বরের পরীক্ষায় ৭২০ পান তাঁরা। দেশের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করেন ওই ৬৭ জনই। শুধু তাই নয়, এই ৬৭ জন একই কোচিং সেন্টারের পড়ুয়া বলে অভিযোগ সামনে এসেছে। (NEET Row)


NEET উত্তীর্ণ কিছু পরীক্ষার্থী ৭১৮,কিছু ৭১৯ নম্বরও পেয়েছেন। পরীক্ষায় নম্বর প্রদানের যে কাঠামো, তাতে এই নম্বর পাওয়া অসম্ভব বলে মত পরীক্ষার্থী থেকে শিক্ষাবিদদের। তাঁদের দাবি, প্রত্যেক সঠিক উত্তরের জন্য ৫ নম্বর দেওয়া হয়, প্রতি ভুল উত্তরের জন্য কেটে নেওয়া হয় ১ নম্বর। একবার OMR শিটে নম্বর বসানো হলে, তা আর পাল্টানোর উপায় থাকে না। ফলে ৭১৮ এবং ৭১৯ কোনও ভাবেই পাওয়া সম্ভব নয় বলে মত তাঁদের। নতুন করে উত্তরপত্র যাচাইয়ের পাশাপাশি, নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ারও দাবি উঠছে তাই। 




পথে নেমেছেন পরীক্ষার্থীরা। ছবি: Getty.


আরও পড়ুন: NEET Hearing: 'পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে, জবাব দিতে হবে', NEET নিয়ে নোটিস ধরাল সুপ্রিম কোর্ট


নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে এই অসঙ্গতির অভিযোগ নিয়ে সাফাই দিয়েছে NTA. তারা জানিয়েছে, কিছু পরীক্ষার্থীকেই ৭১৮, ৭১৯ নম্বর দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ বাবদ ওই নম্বর দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের। তারা গঠন করা একটি জানিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে সম পর্যাপ্ত ছিল না। সেক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীর উত্তর লেখার দক্ষতার উপর নির্ভর করে গ্রেস মার্কস দিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হয়েছে। NTA আরও জানিয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে প্রায় ৩ লক্ষ বেশি পড়ুয়া পরীক্ষায় বসেন। পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতেই প্রাপ্ত নম্বরও বেড়েছে। ২০২৪ সালের NEET তুলনামূলক ভাবে সহজতর করে তোলা হয় বলেও যুক্তি দেয় NTA. 


NEET পরীক্ষায় চারটি বিষয়ে মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন থাকে, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, জুলজি এবং বটানিতে। প্রত্যেক বিষয়ের উপর ৫০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে। এর মধ্যে মূল্যায়নের জন্য সর্বাধিক ৪৫টি প্রশ্নই বিবেচনা করা হয়। ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিটের মধ্যে ১৮০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। সঠিক এবং যথোপযুক্ত উত্তর পেলে ৪ নম্বর মেলে। ভুল উত্তরের ক্ষেত্রে ১ নম্বর করে কাটা যায়। প্রশ্ন ছেড়ে দিলে কোনও নম্বর কাটা যায় না। একটি প্রশ্নের ক্ষেত্রে একাধিক সঠিক উত্তর থাকলে, একটিতে টিক দিলেই ৪ নম্বর পাওয়া যায়। প্রত্যেকটি অপশন ঠিক হলে, প্রত্যেক চেষ্টাতেই ৪ নম্বর করে মেলে। তাই এবারে অনেকেরই প্রাপ্ত নম্বরের হিসেব মেলানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। 


আইনজীবী জে সাই দীপক জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হাওয়া নিয়ে মামলা দায়ের হয়েছে যেমন, তেমনই গ্রেস মার্ক হিসেবে নির্বিচারে ৭০-৮০ নম্বর কিছু জনকে বিলিয়ে দেওয়ার অভিয়োগও রয়েছে। ২০ হাজার পড়ুয়া সেই আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। কমপক্ষে ১৫০০ পরীক্ষার্থে গ্রেস মার্ক হিসেবে ৭০-৮০ নম্বর পেয়েছেন বলে অভিযোগ।  


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI