প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: নিটের প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে (NEET UG Paper Leak Case) তোলপাড় দেশ। পাটনার এসএসপি-কে তলব করল সিবিআই। এই মামলার 'মাস্টারমাইন্ড' সঞ্জীব মুখিয়া সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য এল প্রকাশ্যে। সিবিআই সূত্রে, চুক্তি করে প্রশ্ন বিক্রির কারবার করতেন সঞ্জীব মুখিয়া। পড়ুয়াদের সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকায় ডিল হতো সঞ্জীবের। হাজার টাকার স্ট্যাম্প পেপারে তৈরি হত চুক্তিপত্র। সেখানে স্পষ্ট লেখা থাকত যাবতীয় শর্তাবলী। আগাম কত টাকা দিতে হবে, পরীক্ষার আগে কত টাকা দিতে হবে, ফল প্রকাশের পরে কত দিতে হবে, সব লেখা থাকত সেই চুক্তিপত্রে। চাকরি পেলে কত টাকা দিতে হবে, চাকরি না পেলেই বা কী করণীয় তাও লেখা থাকত সেই চুক্তিপত্রে। সেই কাগজে সঞ্জীব মুখিয়া ও প্রশ্ন কিনতে ইচ্ছুক পড়ুয়ার স্বাক্ষর থাকত, খবর সূত্রের। 


যা জানা গেল...
গত কাল, সোমবার, পটনার শাস্ত্রীনগর থানায় গিয়ে এই মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র সংগ্রহ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। পটনা পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স ইউনিট থেকে নথি সংগ্রহ করেন তাঁরা। আজ, পটনা পুলিশের এসএসপি-ডে ডেকে কথা বলছেন তাঁরা। এই মামলার প্রাথমিক তদন্ত করেছিল পটনার পুলিশ। সেই তদন্তে কী জানা গিয়েছিল, সেটা খতিয়ে দেখছে সিবিআই। আপাতত সূত্রে যা জানা যাচ্ছে, তার কেন্দ্রে সঞ্জীব মুখিয়া। নিট প্রশ্নফাঁস কাণ্ডের 'কিং পিন' বলে তাঁকে মনে করছেন সিবিআই আধিকারিকরা। এই সঞ্জীব সম্পর্কে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা দস্তুরমতো অবাক করার মতো বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তাঁরা জেনেছেন, ১ হাজার টাকার স্ট্যাম্প পেপারে একটি 'ডিড' তৈরি হত। যাঁদের কাছে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হবে, তাঁদের সঙ্গেই ওই ডিড করতেন সঞ্জীব। জমি-জায়গা-ফ্ল্যাট  কেনার ক্ষেত্রে যে ভাবে স্ট্যাম্প পেপার কেনা হয়, এই গোটা দুর্নীতির ক্ষেত্রেও সেভাবেই স্ট্যাম্প পেপার ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জেনেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। এই চুক্তিপত্রেই সব শর্ত বিশদে লেখা থাকত। সব মিলিয়ে যেটা দেখা যেত, খুব নিয়ম মাফিক এই অসাধু চক্র কাজ করত। শুধু তাই নয়। প্রার্থীদের থেকে 'পোস্ট-ডেটেড' চেক নিয়ে রাখা হত যাতে পরে কোনও ঝামেলা না হয়।
এই মামলায় বিহার পুলিশ আগেই  ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছিল। তাদের আজ আদালতে পেশ করা হয়েছিল। তবে আজ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগামী দিনে এই মামলার শুনানি সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে হবে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় আরও ভাবতে হচ্ছে সিবিআই আধিকারিকদের। সঞ্জীব মুখিয়া আগেই আদালতের থেকে যে 'রক্ষাকবচ' নিয়ে রেখেছে, তার মোকাবিলা কী ভাবে করা হবে? সম্ভবত আগামীকাল, সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে বিশেষ আদালতে আবেদন জানাতে পারে সিবিআই।


আরও পড়ুন:প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে 'ধাক্কা' দেহরক্ষীর, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণের তারকা নাগার্জুন