নয়াদিল্লি: আজ নেতাজির জন্মবার্ষিকী। দেশজুড়ে সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে উৎসব। এদিকেে নেতাজির জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েই বিপাকে পড়লেন রাহুল গান্ধী। তাঁর সোশ্যাল পোস্ট ঘিরে উঠেছে নেতাজীকে 'অপমান' করার অভিযোগ। মূলত রাহুলের পোস্টে নেতাজির মৃত্যুর তারিখ লেখা নিয়েই তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি !




নেতাজির 'মৃত্যুর তারিখ' ঘোষণা রাহুলের


নেতাজির জন্ম তারিখ ২৩ জানুয়ারি আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর তারিখ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। নেতাজির জন্ম তারিখ ১৮৯৭ সালের ২৩  জানুয়ারি অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই ১০০ বছর পার হয়ে,  দেড়শোর পথে। তাই জীবনকালের একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর, তিনি জীবিত নাকি মৃত এ প্রশ্ন, শীতল ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। তবে এখনও ধারালো যুক্তির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নেতাজির মৃত্যুর তারিখ। আর এদিন সোশ্যাল পোস্টে নেতাজির মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ করেই চরম বিতর্কে জড়িয়েছেন সোনিয়া পুত্র রাহুল।


ঠিক কী হয়েছিল ?


এদিন তিনি সোশ্যাল পোস্টে লেখেন , আজাদহিন্দ  ফৌজের প্রতিষ্ঠাতা মহান বিপ্লবী নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে , তাঁর জন্মদিনে জানাই শ্রদ্ধা। তাঁর সংগ্রাম, সহ্যক্ষমতা এবং অবদান, দেশবাসীকে অনুপ্রাণিত করে। প্রণাম জানাই। এটুকু বলে, তিনি নেতাজির ছবির উপরে তাঁর মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ করেছেন। মৃত্যু তারিখ হিসেবে তিনি লিখেছেন, ১৮ অগাস্ট, ১৯৪৫। রাহুলের কথা অনুযায়ী , স্বাধীন ভারতকে তাহলে দেখে যেতে পারেননি। অর্থাৎ  তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনাতেই যে নেতাজির মৃত্যু হয়েছে, বিতর্কিত সেই  তত্ত্বেই মান্যতা দিয়েছেন সোনিয়া পুত্র।






 


নেই প্রমাণ, কীসের ভিত্তিতে রাহুল এই কথা আজ বললেন ?


যদিও নেতাজি অন্তর্ধান রহস্যের যবনিকা টানতে, একাধিক কমিশন এবিষয়ে তদন্তে নেমেছিল। কিন্তু কোনও কমিশনই তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনাতেই যে নেতাজির মৃত্যু হয়েছে, তার প্রমাণ দিতে পারেনি। তাই বলাইবাহুল্য কীসের ভিত্তিতে রাহুল এই কথা আজ বললেন, তা নিয়েই জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তোপ দাগতে কেউ ছাড়েনি।


আরও পড়ুন, নেতাজি জন্মদিনে সুভাষচন্দ্রর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর তুলনা TMC বিধায়ক সৌমেনের ! বললেন..


পোস্ট ঘিরে রাহুলকে নিশানা


বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'লোকসভার বিরোধী দলনেতার মত পদে বসে থাকা ব্যাক্তি যে কাজ করলেন, তা একদমই মেনে নেওয়া যায় না।গোটা দেশের কাছে রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়া উচিত।'  অপরদিকে, রাহুলের পোস্ট ঘিরে নিশানা তৃণমূলেরও। শাসকদলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'নেতাজি সম্পর্কে অন্তর্ধান রহস্য কথাটা, ব্যবহৃত হয়। ওই তারিখে আদৌ তাইহাকুতে কোনও বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছিল কিনা, এবং সেখানে কারও মৃত্যু হয়েছিল কিনা, তা কোনও প্রমাণ নেই। তাই ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট, নেতাজির মৃত্যুদিন বলে দেওয়া, কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।' তবে রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে বিজেপির দাবির সঙ্গেও সহমত নন তিনি। কুণাল বলেছেন, ক্ষমা শব্দটা ব্যবহার করছি না।তবে রাহুল গান্ধীর উচিত নিজের বক্তব্য সংশোধন করা।' পাশাপাশি ফরোয়ার্ড ব্লক চেয়ারম্যান নরেন চট্টোপাধ্যায়, রাহুলকে অর্বাচিন বলে কটাক্ষ করেছেন। বলেছেন, রাহুল গান্ধী অর্বাচিনের মতো মন্তব্য করেছেন। ওকে যদি প্রশ্ন করা হয়, কীভাবে জানলেন , নেতাজি ওইদিন মারা গিয়েছিলেন , উনি উত্তর দিতে পারবেন না।প্রমাণ দেখাতে পারবেন না পালিয়ে যাবেন।'