নয়াদিল্লি: ঠিকরে পড়া আলো, চোখধাঁধানো আয়োজন। ময়ূর পেখমের রং লেগেছে গায়ে। নয়া সংসদভবন দেখে অভিভূত দেশের সাধারণ নাগরিকও। হাজার হাজার শিল্পীর কৃতিত্ব রয়েছে এর নেপথ্যে (Parliament Building Inauguration)। নিখুঁত হাতে গণতন্ত্রের পীঠস্থানকে সুসজ্জিত করে তুলেছেন তাঁরা। এমনকি সংসদের মেঝেয় পাতা সবুজ এবং গেরুয়া ঘেঁষা রংয়ের গালিচা বুনেছেন কয়েকশো শিল্পী (New Parliament Building)।
লোকসভা এবং রাজ্যসভা, সংসদের দুই কক্ষের মেঝেতে পাতা ঘন সবুজ এবং গেরুয়া ঘেঁষা গালিচা ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে সকলের। সেটি হাতে বোনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের ৯০০ শিল্পী এই অসাধ্যসাধন করেছেন। ১০ লক্ষ ঘণ্টা অতিবাহিত করে, নিখুঁত বুননে ওই গালিচা তৈরি করেন তাঁরা। লোকসভার গালিচায় ময়ূরের নকশা ফুটিয়ে তোল হয়েছে। রাজ্যসভার গালিচায় নকশা রয়েছে পদ্মফুলের।
সংসদে গালিচা জোগানের বরাত পায় ওবিতি কার্পেটস নামের একটি সংস্থা। বিগত ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গালিচা তৈরি করে আসছে তারা। লোকসভা এবং রাজ্যসভার জন্য ১৫০টি করে মোট ৩০০টি কার্পেট বুনেছেন ওই সংস্থার অধীনে কর্মরত শিল্পীরা। তার পর সেগুলিকে জুড়ে জুড়ে অর্ধচন্দ্র আকার দেওয়া হয়। আয়তনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে পাতা হয় সংসদের দুই কক্ষে।
কার্পেট সংস্থার মালিক রুদ্র চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ৩৫ হাজার স্কোয়্যার ফুট আয়তনের সংসদের দুই কক্ষের প্রত্য়েকটির আয়তন ১৭ হাজার ৫০০ স্ক্যোয়্যার ফুট করে। তার উপযুক্ত গালিচা বানাতে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। নকশা থেকে মাপ, কোথাও যাতে কোনও রকম বিচ্যুতি না ঘটে, তা মাথায় রেখেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রোজ ব্যবহারে যাতে তাড়াতাড়ি নষ্ট না হয় গালিচা, তার জন্য় গুণমানেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়।
গালিচার রং বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একদিকে ময়ূরের পেখমকে মাথায় রাখা হয়, অন্য দিকে কুমকুমকে মাথায় রেখে গেরুয়া ঘেঁষা লাল রং পছন্দ করা হয়। প্রত্যেক স্কোয়্যার ইঞ্চি গালিচায় ১২০টি বার সুতোর টান পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। এতই সূক্ষ্ম কারুকাজ ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পীরা। অতিমারির সময়, ২০২০ সালেই এই গালিচা বোনার কাজ শুরু হয়। সেলাই শুরু হয় ২০২১-এর সেপ্টেম্বরে। ২০২২ সালের মে মাসে সম্পন্ন হয় কাজ। গালিচা বিছনোর কাজ শুরু হয় ২০২২ সলের নভেম্বর মাসে।