নয়দিল্লি: লালগ্রহের বুকে এবার ভিজে বালিয়াড়ির- চিহ্ন মিলল (Water on Mars)। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র পার্সিভারেন্স রোভার এবং চিনের ঝুরং  রোভার এই আবিষ্কার করেছে। তাতে মঙ্গলগ্রহের বুক চিরেও একসময় নদী বইত বলে নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা (Space Science)। কোটি কোটি বছর আগে নয়, মাত্র ৪ লক্ষ বছর আগেও মঙ্গলের বুক চিরে নদী প্রবাহিত হত বলে দাবি বিজ্ঞানীদের (NASA)। 


নাসা-র দাবি, মঙ্গলের মাটিতে নদী ছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে পারসিভারেন্স রোভার। জেজিরো গহ্বর দিয়েই বয়ে যেত নদী।  তার জলের প্রবাহও ছিল যথেষ্ট। পাহাড়ি এলাকায় নদীর গভীরতা ছিল অন্তত ৬৬ ফুট। তারই ছাপ রয়ে গিয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। এই আবিষ্কারের ফলে অন্য় গ্রহের ভূপৃষ্ঠ সম্পর্কেও বিশদ ধারণা পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সেটিকেই মঙ্গলের বৃহত্তম নদী বলে উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানীরা (Science News)।


তবে একটি মাত্র নদী নয়, মঙ্গলের বুকে একসময় নদী অববাহিকা ছিল বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। জলপথে মঙ্গলের ভূখণ্ড সংযুক্ত ছিল বলে দাবি তাঁদের। আর সেই নদীপথের সংযোগস্থল জেজিরো গহ্বরই ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। দু'বছর ধরে ওই জেজিরো গহ্বরেই গবেষণা চালাচ্ছে নাসা-র রোভার। সেখানে ৮২০ ফুট লম্বা পাললিক শিলারও হদিশ মিলেছে। তার গায়ে জলস্রোতের চিহ্ন মিলেছে। 


আরও পড়ুন: Space Science: জন্ম নিচ্ছে নয়া নক্ষত্র, অথচ শান্ত-স্থিতধী অবস্থান তার, ‘জেলিফিশ’ ছায়াপথের চোখ ধাঁধানো ছবি প্রকাশ করল নাসা


সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে নয়া এই আবিষ্কার বিশদে প্রকাশিত হয়েছে। ২০২১ সালে মে মাসে মঙ্গলের মাটি ছোঁয় চিনের ঝুরং। ধুলোর ঝড়ের মোকাবিলা করতে বেশ কিছু দিন সেটিকে কৃত্রিম উপায়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তার পর আর নিদ্রাভঙ্গ করা যায়নি। ধুলো জমেই এমন অবস্থা হয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। 


তার আগেই যদিও মঙ্গলের মাটিতে এককালে জলের অস্তিত্ব ছিল বলে ইঙ্গিত পেয়েছিল ঝুরং। বালিয়াড়ি থেকে একটি চাঙড় উদ্ধার হয়। তার উপর যে আবরণ তৈরি হয়েছিল, তা একমাত্র জল এবং খনিজের সংস্পর্শেই তৈরি হওয়া সম্ভব। বিজ্ঞানীদের ধারণা, কোনও কালে তুষারপাত হয়ে থাকবে সেখানে। তার ফলে জল জমে যায়। সেই ছাপ রয়ে গিয়েছে বালিয়াড়ির উপরও। সংঙ্কোচন এবং প্রসারণের ফলেই এমন ঘটেছে বলে দাবি।


ব্রাউন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী রাল্ফ মিলিকেন মঙ্গল গ্রহে নাসা-র কিউরিওসিটি অভিযানে শামিল। তিনি জানিয়েছেন, লালগ্রহের বুকে যে ধুলো রয়েছে, তা খনিজসমৃদ্ধ। .বাতাস থেকে শোষণ করতে পারে জলীয়বাষ্প। যুগ যুগ ধরে পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার সংস্পর্শে এসেই বালিয়াড়ির উপর আস্তরণ গড়ে উঠেছে। শোষিত জলীয় বাষ্প আর জলের আকার ধারণ করতে পারেনি।