ওয়েলিংটন: আগামী মাসেই পদত্যাগ করবেন। ঘোষণা করলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জসিন্ডা আর্ডার্ন (Jacinda Ardern)। লেবার পার্টির বৈঠকে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, "আমার জন্য এটাই ঠিক সময়। আরও চার বছর চালিয়ে যাওয়ার রসদ নেই আমার কাছে।" (Jacinda Ardern Resignation)
আগামী মাসেই পদত্যাগ করবেন জসিন্ডা আর্ডার্ন
২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন জসিন্ডা। তার পর, সেন্টার-লেফ্ট লেবার পার্টি তাঁর নেতৃত্বেই জয়লাভ করে। তিন বছর পর। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে জসিন্ডার গ্রহণযোগ্যতা কমতে শুরু করেছিল। সমীক্ষাতে স্পষ্টত ধরাও পড়ছিল।
এর মাসখানেক আগে, লেবার পার্টির বার্ষিক সমাবেশে জসিন্ডা জানান, দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তে অবিচল ছিলেন তিনি। শক্তিসঞ্চয় করতেও নেমেছিলেন। জসিন্ডার ব্যক্তব্য, "কিন্তু তা করে উঠতে পারিনি আমি।"
জসিন্ডা জানিয়েছেন, নিউজিল্যান্ডে এ বছর ১৪ অক্টোবর ফের পরবর্তী নির্বাচন হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত সাংসদের দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। সিদ্ধান্তের নেপথ্য কারণ ব্যাখ্যা করেন জসিন্ডা। তিনি বলেন, "আমি পালিয়ে যাচ্ছি না। তবে আমার বিশ্বাস, আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে পারব না।"
৭ ফেব্রুয়ারি থেকেই তাঁর ইস্তফাপত্র কার্যকর হয়ে যাবে বলে নিয়েছেন জসিন্ডা। ২২ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে সেখানে। তবে জসিন্ডার ডেপুটি, গ্র্যান্ট রবার্টসন নিজের নাম তুলে নেওয়ার পক্ষপাতী নন আপাতত। তাঁর পদত্য়াগের সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কোনও রহস্য় নেই বলেও জানান জসিন্ডা।
নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানাতে গিয়ে জসিন্ডা বলেন, "আমি একজন মানুষ। যত দিন সম্ভব, দিয়ে যেতে পারি আমরা। তার পর সন্ধি ক্ষণ চলে আসে। আমার জন্য় এটাই সন্ধি ক্ষণ। এমন বিশেষ কাজের ক্ষেত্রে দায়িত্বও অনেক গুণ বেড়ে যায়। তাই নিজেকে প্রশ্ন করতে হয়, ওই দায়িত্ব নেওয়ার ঠিক মানুষ কিনা।"
২০১৭ সালে ৩৭ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের প্রধামন্ত্রী নির্বাচিত হন জসিন্ডা। বিশ্বের কনিষ্ঠতম মহিলা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। করোনা অতিমারির সময়ও দেশকে নেতৃত্ব দেন জসিন্ডা। ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে হামলা, হোয়াইট আইল্য়ান্ডে অগ্ন্যুৎপাতের মতো হামলা এবং বিপর্যয়ও তাঁর শাসনকালেই ঘটেছে। নিউজিল্যান্ডের সাধারণ মানুষের স্মৃতিতে কী ভাবে থেকে যেতে চান জসিন্ডা! তাঁর জবাব, "এমন একজন যিনি সর্বদা স্নেহশীল থাকার চেষ্টা করেছেন।"
২০১৭ সালে ৩৭ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের প্রধামন্ত্রী নির্বাচিত হন জসিন্ডা
গত এক বছরে বার বার বিরোধিতা, হুমকির মুখে পড়েছেন জসিন্ডা। হিংসার হুমকিও এসেছে। টিকা-বিরোধী বিক্ষোভও দেখেছেন। তবে এসবের জন্য পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেননি বলে দাবি জসিন্দার। পরিবারকে সময় দেওয়া ছাড়া আপাতত কোনও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন জসিন্ডা।