কলকাতা:  এই মুহূর্তে করোনা আতঙ্কে সবথেকে পর্যুদস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের সাম্রাজ্যে যেন মৃত্যু মিছিল। কিন্তু পরিস্থিতিটা এমন ছিল না। মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত কেউ বোঝেইনি, পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। সবাই ভেবেছিল, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু চোখের সামনেই বাড়ল ভয়াবহতা। সেই বদলে যাওয়া চিত্রটা তুলে ধরলেন আমেরিকায় ডেলাওয়্যার নিবাসী তরুণী মালিনী বসু চৌধুরী।
''নিউজার্সির ঠিক পাশেই ডেলাওয়্যার। ১২ই মার্চ পর্যন্তও আমরা চেনা ছন্দে জীবন যাপন করছিলাম। নিয়মিত বাইরে বেরোচ্ছিলাম। জনজীবন স্বাভাবিক ছিল। দেশে মানুষের হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার ও টিস্যু রোল কেনার বহর দেখে আমরা সবাই হাসাহাসি করছিলাম, মিমস শেয়ার করছিলাম। তারপরই ১৩ই মার্চ ডেলাওয়্যারের গভর্নর হঠাৎ স্টেট এমার্জেন্সি ঘোষণা করলেন। এক এক করে কলেজ,ইউনিভার্সিটি, স্কুল, অফিস,কাছারি, শপিংমল, পাব, মুভি থিয়েটার সব বন্ধ হল। ''


ডেলাওয়্যার স্টেটে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। এখনই মৃত ৬।
১৮ দিন ধরে গৃহবন্দি মালিনীরা দেশে ফেরার কথা ভাবেনইনি, শুধুমাত্র পথে সংক্রমণের ভয়ে।
এমার্জেন্সি জারি হওয়ার পর সেখানকার ছবিটাও ছিল অনেকটাই এখানকার মতো। সবাই গ্রসারি কিনতে ভিড় জমান স্টোরে। তারপরই হু হু করে বেড়ে যায় আক্রান্তের সংখ্যা।
মালিনীর কথায় , ''সেদিন বুঝিনি কিন্তু আজ ভালো করেই কো-ল্যাটারাল ড্যামেজটা বুঝতে পারছি। হঠাৎই নতুন কেস বেড়ে গেছে। হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার, এন৯৫ মাস্ক, গ্লাভস সবই বাজারে অমিল! বাড়িতেই হ্যাণ্ড স্যানিটাইজার তৈরি করা হয়েছে। ''
হালফিলে বন্ধ হয়ে গেছে ইন্ডিয়ান গ্রসারি স্টোর। ওদের রসদে টান।  সমস্যা বেড়েছে তা বটেই। সামান্য কিছু খাবারের দোকান,গ্রসারি স্টোর,মেডিসিন শপ এখনও খোলা। এই সময় বাড়ির জন্যই বেশি চিন্তিত মালিনীর পরিবার। ভাবছেন, ''  কিছু মানুষ বোধহয় লক ডাউনের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারছেন না এবং সেই একই চিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও দেখা যাচ্ছে। উইকএণ্ডে অনেক মানুষ অভ্যাসমত বিচ পার্টি করছেন,লেকের ধারে পিকনিক করছেন। এগুলো এক্ষুনি বন্ধ করা দরকার।

ট্রাম্প সরকারের পক্ষ থেকে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে। করোনার প্রকোপে বিশ্ব অর্তনীতিতে যে বড় ধাক্কা অপেক্ষা করছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই মালিনী বললেন, '' বেকারত্ব বাড়ায় ক্রাইম রেট বাড়বে, এই আশঙ্কায় বহু মানুষ ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কথা ভেবে বন্দুকের দোকানে লাইন দিচ্ছেন।  ''
সেখানে এখনও যথেষ্ট  স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা নেই, তাই আতঙ্ক বাড়ছে। এর মধ্যেই বাড়ির সকলকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে 'কিছু একটা মিরাকল ঘটার' অপেক্ষা করছেন মালিনীর মতো অনেকেই।