ভুবনেশ্বর: শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য চাপ। ভবিষ্যৎ বরবাদ করে দেওয়ার হুমকি। অধ্য়াপকের হাতে হেনস্থার শিকার হয়ে চরম সিদ্ধান্ত পড়ুয়ার। নিজের গায়ে আগুন দিলেন তরুণী। ওড়িশার বালেশ্বর থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। তরুণীর শরীরের ৯৫ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে। এক পড়ুয়া তাঁকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন। তাঁর শরীরের ৭০ শতাংশও পুড়ে গিয়েছে। (Odisha News)

ওড়িশার বালেশ্বরের ফকির মোহন কলেজ থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, সেখানে B.Ed কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন এক তরুণী। কিন্তু কলেজের বিভাগীয় প্রধান লাগতার হেনস্থা করছিলেন তাঁকে। যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চাপ সৃষ্টি করছিলেন। রাজি না হলে ভবিষ্যৎ শেষ করে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছিলেন ওই অধ্য়াপক। (Odisha Teacher Harasses Student)

এতদিন মুখ বুঝে সহ্য করলেও, গত ১ জুলাই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী। কলেজের বিভাগীয় প্রধান সমীর কুমার সাহু হেনস্থা করছেন, হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।সাত দিনের মধ্যে ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে তরুণীকে আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এতে, গত শনিবার অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতিবাদে শামিল হন নির্যাতিতা। 

কলেজের মূল ফটকের সামনেই প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছিল। সেই সময় হঠাৎই ওই তরুণী অধ্যক্ষের দফতরের দিকে দৌড় দেন। সেখানে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে, দেশলাই জ্বালিয়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে ফেলে নির্যাতিতা। প্রতিবাদে শামিল এক যুবক ছুটে যান ওই তরুণীকে বাঁচাতে। কিন্তু তাঁর টি-শার্টেও আগুন ধরে যায়। তিনি ছটফট করতে থাকলে বাকিরা ছুটে আসেন আগুন নেভাতে। আগুনের গ্রাসে ছটফট করতে থাকা তরুণী ও ওই যুবকের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। 

কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, তরুণীর অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। কলেজের অভ্যন্তরীণ কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তিনি বলেন, “মেয়েটি অফিসে আমার সঙ্গে দেখা করেছিল। জানিয়েছিল, অসম্ভব মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সাহুকে ডেকে পাঠাতেও বলে ও। সেই মতো অভিযুক্ত অধ্যাপককেও ডেকে পাঠাই। জানিয়ে দিই, দু’জনের যে-ই মিথ্যে বলুন না কেন, কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে। অভিযুক্ত অধ্যাপক অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তরুণী নিজের দাবিতে অনড়।”

ওই তরুণী গায়ে আগুন দেওয়ার পর প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। বালেশ্বরের পুলিশ সুপার রাজপ্রসাদ জানিয়েছেন, অধ্যাপককে গ্রেফতার কার হয়েছে। প্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। যে-ই দোষী হন না কেন, শাস্তি দেওয়া হবে। অগ্নিদগ্ধ তরুণী এবং ওই যুবক ভুবনেশ্বর AIIMS-এ ভর্তি রয়েছে। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ জানিয়েছেন, কলেজের অধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করা গয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত অধ্যাপককে। তাঁকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে।