নয়াদিল্লি: দুর্ঘটনার কেটে গিয়েছে ৩৬ ঘণ্টার বেশি সময়। এখনও পর্যন্ত হাহাকার চারিদিকে। মৃতদেহের স্তূপ জমা হয়ে রয়েছে মর্গে (Odisha Train Accident)। সেই আবহেই বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার গায়ে সাম্প্রদায়িকতার রং লাগতে শুরু করেছে। সেই নিয়ে এ বার সকলকে সতর্ক করল ওড়িশা পুলিশ (Coromandel Train Accident)। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। এর নেপথ্যে যে বা যারা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিল ওড়িশা পুলিশ (Odisha Police)।
ওড়িশা পুলিশের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ওড়িশা পুলিশের ট্যুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়, 'গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করছেন যাঁরা, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে'। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখছে গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (GRP)। তার আগে যাঁরা গুজব ছড়াচ্ছেন, তাঁদের রেয়াত করা হবে না বলে জানিয়েছে ওড়িশা পুলিশ।
বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার নেপথ্য কারণ হিসেবে এখনও পর্যন্ত একাধিক সম্ভাবনা উঠে এসেছে। সিগনাল এবং পয়েন্ট বিভ্রাট তার মধ্যে অন্যতম। এ নিয়ে ভারতীয় রেলের বোর্ডের সদস্য জয়া বর্মা সিনহা জানিয়েছেন, সিগনাল বিভ্রাটের বিষয়টি চিহ্নিত করা গিয়েছে। তবে এখনই চূড়ান্ত কিছু নয়। বিষয়টি আরও গভীর ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনে দুর্ঘটনাপ্রতিরোধী যন্ত্র 'কবচ' কেন ছিল না, ইতিমধ্যেই সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে এই প্রশ্ন তোলেন। ওই রুটে 'কবচ' বসানো যায়নি বলে আগেই জানিয়েছে রেল। যদিও তার জন্য দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা মানতে রাজি নন কর্তৃপক্ষ।
বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতর সংখ্যা ১ হাজারের বেশি। পরিচয়হীন মৃতদেহের স্তূপ জমছে অস্থায়ী মর্গে। প্রিয়জনকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন বহু মানুষ। প্রায় ২০০ জনের দেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি। ভুবনেশ্বর এইমসে ১০০ জনের দেহ রাখা হয়েছে।
পরিজনেদের কথা ভেবে মৃতদেহের ছবি তুলে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনাও সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে। ১৯৩ জনকে কটকে ওড়িশার মেডিক্যাল কলেজে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, ভুবনেশ্বর এইমস ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও কেন আহতদের ওই হাসপাতালে পাঠানো হয়নি?
এ দিকে, দুর্ঘটনাস্থলে এখনও রয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি কামরা। সেগুলির মধ্যে আরও দেহ আটকে থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না উদ্ধারকারীরা। যদিও উদ্ধারকারী দলের দাবি, অধিকাংশ দেহ এবং যাত্রীদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত কামরাগুলি থেকে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে এনডিআরএফ।