নয়া দিল্লি: পহেলগাঁও হামলার পর বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ অব্যাহত। নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন, প্যারিস, দেশে দেশে জঙ্গি হানার সমালোচনা। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানার ৬ দিনের মাথাতেও অধরা হামলায় জড়িত জঙ্গিরা। এই প্রেক্ষাপটে পহেলগাঁও হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় এক দিনের বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। জঙ্গি হামলায় মৃতদের আত্মার শান্তি কামনায় নীরবতা পালন করলেন বিধায়করা। গভীর শোক প্রকাশ করেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। পর্যটকদের সুরক্ষার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে করলেন ক্ষমাপ্রার্থনা। 

জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় আবেগঘন ভাষণে নিজের 'ব্যর্থতা'র কথা বলে চলেন। দায় স্বীকার করতেও দ্বিধা করেননি। এদিন বিধানসভায় ওমর আবদুল্লা বলেন, "যদিও আমি আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নই, তবুও আমি পর্যটকদের কাশ্মীর ভ্রমণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তাঁদের আতিথেয়তাকারী হিসেবে, তাঁদের দেখাশোনা করা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার কর্তব্য ছিল। পর্যটকদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করার মতো কোনও ভাষা আমার নেই।"  

ভাষণের প্রতিটি ছত্রে ছিল দায়স্বীকারের সুর। জঙ্গিদের গুলিতে নিহতদের পরিবারের প্রতি বিবৃতি দিতে গিয়ে তিনি বলেন, 'কয়েকদিন আগে বিয়ে করা নৌবাহিনীর অফিসারের বিধবা স্ত্রীকে আমি কী বলব? তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো আমার কোনও ভাষা নেই। কী বলতাম ওই ছোট্ট ছেলেটাকে, যে তার চোখের সামনে তার বাবাকে রক্তাক্ত হয়ে মরতে দেখেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে, পর্যটন মন্ত্রী হিসেবে, আমিই তো সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ডেকে এনেছিলাম। সবাইকে নিরাপদে ঘরে ফেরানোর দায়িত্ব আমারই ছিল। আমি পারিনি। কোন মুখে আজ ক্ষমা চাইব?'   

পহেলগাঁও হামলার নিন্দায় সোমবার বিশেষ অধিবেশনে ওমর আবদুল্লা জানিয়ে দেন, "কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যের মর্যাদা দাবি করার জন্য আমি আজকের পরিস্থিতিকে ব্যবহার করব না। আমি মৃতদেহের উপর রাজ্যের মর্যাদা দাবি করব না। আমরা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে এটি দাবি করব।" উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকেই অঙ্গরাজ্যের স্বীকৃতি চেয়ে সুর চড়িয়েছে কাশ্মীর। তবে ২০২৪ সালে নির্বাচন হলেও পূর্ণরাজ্যের স্বীকৃতি এখনও মেলেনি। পহেলগাঁও হামলাকে ব্যবহার করে মোটেও কাশ্মীরের অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবি করবেন না তিনি, সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সেই বিবৃতি দেন ওমর আবদুল্লা।                               

বিধানসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে আবদুল্লা বলেন, "আমরা কেউই এই আক্রমণকে সমর্থন করি না। এই আক্রমণ আমাদের ফাঁকা করে দিয়েছে। আমরা এর মধ্যে আলোর রশ্মি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। গত ২৬ বছরে, আমি কখনও মানুষকে এই ধরণের আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে দেখিনি।"