নয়াদিল্লি: গণপিটুনি ইস্যুতে নিজের মন্তব্যে অনড় রয়েছেন। সমাজে যেভাবে ‘খোলাখুলি ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ’ ঘটছে, তাতে তিনি বিচলিত। জানালেন নাসিরুদ্দিন শাহ। রাজনৈতিক, সামাজিক ইস্যুগুলিতে নিজের মতামতের জন্য চলচ্চিত্র মহলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে কিনা, ইন্ডিয়া ফিল্ম প্রজেক্ট-এ আলাপচারিতায় ৬৯ বছর বয়সি বলিউড অভিনেতাকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোনওকালেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির লোকজনের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠতা, মাখামাখি ছিল না আমার। ফলে এতে আমার জায়গা নষ্ট হয়েছে কি, হয়নি, জানি না, কেননা খুব বেশি, ঘনঘন কাজের অফার এমনিতেই পাই না। যা মনে হয়, বলে দিই, তাতেই অটল থাকি। প্রবীণ অভিনেতা আরও বলেন, প্রচুর গালাগাল করা হয় আমাকে। যাদের এর চেয়ে ভাল কিছু করার নেই, তারা আমায় গালমন্দ করে, কিন্তু তাতে আমার কিছুই আসে যায় না। তবে এমন প্রকাশ্যে ঘৃণার ছড়াছড়ি পীড়াদায়ক, উদ্বেগের ব্যাপার। গত বছর বুলন্দশহরে পুলিশ অফিসারের জনতার হাতে মৃত্যুর ঘটনার পর প্রচণ্ড ক্ষোভে নাসিরুদ্দিন বলেছিলেন, এ দেশে একজন পুলিশকর্মীর হত্যাকে ছাপিয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে একটা গোহত্যা, যা নিয়ে জোর শোরগোল হয়। সম্প্রতি সাংস্কৃতিক দুনিয়ার যে ১৮০ জন নামীদামী মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একাধিক গণপিটুনির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে খোলা চিঠি দেওয়ায় ৪৯ জন বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার নিন্দা করেছেন, তাঁদের মধ্যে যেমন আনন্দ পট্টবর্ধন, রোমিলা থাপার, হর্ষ মান্দার ছিলেন, তেমনই ছিলেন নাসিরুদ্দিনও। গত সপ্তাহেই অপর্ণা সেন, আদুর গোপালকৃষ্ণান, রামচন্দ্র গুহ সহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে বিহারের মুজফফরপুরে এফআইআর দায়ের হয়। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির ইস্যুতে। সেজন্য তাঁদের রাষ্ট্রদ্রোহিতায় অভিযুক্ত করা হয়। তবে নানা মহলের সমালোচনা, আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত বিহার পুলিশ মামলা বন্ধ করার নির্দেশ দেয়, উল্টে ৪৯ বুদ্ধিজীবীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ অভিযোগ তোলায় অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই বিচারের সিদ্ধান্ত নেয়।