নয়াদিল্লি: ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাইছে কোনও পাকিস্তানি, এমন দৃশ্য সত্যিই অভাবনীয়, অকল্পনীয়। তবে, সেই বিরল দৃশ্য দেখা গেল সুদূর বিলেতে।


লন্ডনে চিনা দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদের সময় জাতীয় সঙ্গীত গাইছিলেন কয়েক'শ ভারতীয়। সেই সময় তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়ে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় গানে গলা মেলাতে দেখা গেল বেশ কিছু পাকিস্তানিকেও।


যেমন পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মী আরিফ আজাকিয়া। বরাবর ঠোঁট-কাটা বলে পরিচিত তিনি। রূঢ় সত্যিটা স্বীকার করতে ও বলতে দ্বিধা করেন না আরিফ। সেই তিনিও এদিন চিনা দূতাবাসের সামনে ভারতীয়দের সঙ্গে প্রতিবাদে সামিল হন। তাঁর মুখে স্লোগান ছিল 'বয়কট চিন'। তিনিও ভারতীয়দের সঙ্গে 'জনগণমন' ও 'বন্দেমাতরম' গাইলেন। স্বীকার করলেন, জীবনে এই প্রথম ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাইলেন তিনি।





আরিফের মতোই ওই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে আসা আমজাদ আয়ুব মির্জা। শুধু তাই নয়, চিন-বিরোধী এই বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন করাচি ও সুদূর ইরান থেকে আসা অনেকে। সকলের গলায় একই অভিযোগ-- চিন তাদের বিষয়ে মাথা গলাচ্ছে।


মির্জা বলেন, আমি সেই গ্লাসগো থেকে এসেছি এই প্রতিবাদে সামিল হতে। আমি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে থাকি। আমি পাকিস্তানের অধীনে থাকা এক ভারতীয়। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের জন্য গিলগিট-বালতিস্তানে ভয়াবহতা শুরু করেছে চিন। আর পাকিস্তান প্রশাসন তাদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চলছে। অতীতেও, পাক প্রশাসনের দ্বারা পিওকে বাসিন্দাদের শোষণ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন মির্জা।


লন্ডনের রাস্তায় চিন-বিরোধী আন্দোলনের পারদ ক্রমশ চড়ছে। শনিবার রাতে চিনা দূতাবাসের সামনে অনেকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সামিল হন। তাঁদের হাতে তিব্বত, হংকং ও উইঘার মুসলিমদের মুক্তির দাবি নিয়ে প্ল্যাকার্ড-পোস্টার ছিল।


ইংল্যান্ডের মতো একইভাবে চিন-বিরোধী আন্দোলনের ঢেউ উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। সর্বত্র চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ছবি হাতে নিয়ে বেজিংয়ের সম্প্রসারণবাদ নীতির সমালোচনা করা হয়। সব জায়গায় দাবি ওঠে, চিনের উচিত অবিলম্বে এই ক্ষমতার খেলা বন্ধ করার।


জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘর মুসলিমদের ওপর বর্বরোচিত অত্য়াচারের সঙ্গ জড়িত থাকার অভিযোগে চিনা সরকার ও আধিকারিকদের নিষিদ্ধ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হংকংয়ের বাসিন্দাদের ওপর অত্যাচার নিয়েও সোচ্চার বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। লাদাখের গালওয়ানে সংঘর্ষে ২০ জওয়ানের মৃত্যুর পর চিনা পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছে ভারতীয়রা।  জাপান থেকে অস্ট্রেলিয়া-- সকলেই চিনের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে, ড্রাগনের গলায় ফাঁস ক্রমশ চেপে বসছে।