নয়াদিল্লি: মেয়ের শিক্ষার খরচ বহন করতে মা-বাবা বাধ্য বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। মেয়েদের শিক্ষার অধিকারে সিলমোহর দিয়ে, মা-বাবার দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে দিল শীর্ষ আদালত। আদালত পরিষ্কার জানিয়েছে, মা-বাবার কাছ থেকে পড়াশোনার খরচ আদায়ে মেয়েদের অধিকার অনস্বীকার্য। তাদের এই অধিকার আইনত বৈধ এবং কার্যকর। (Supreme Court)
বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ এই মন্তব্য করেছে। একটি দাম্পত্য সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছিল আদালতে। ওই দম্পতি একসঙ্গে থাকেন না আর। তাঁদের মেয়ে আয়ারল্যান্ডে পড়াশোনা করছেন। পড়াশোনার খরচ বাবদ বাবা তাঁকে মাত্র ৪১ লক্ষ টাকা ধরিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী। (Parental Duties)
মাকে যে খোরপোষ দিয়েছেন, তারই অংশ হিসেবে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তরুণী। ওই টাকা নিতে অস্বীকার করেন তিনি। আদালেত ওই তরুণী জানান, নিজের মান-সম্মানের কথা মাথায় রেখেই ওই টাকা নিতে অস্বীকার করেন তিনি। বাবাকে টাকা ফেরত নিতে অনুরোধও করেন। কিন্তু ওই টাকা ফেরত নিচ্ছেন না বাবা।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার খরচ অনেক। সেই টাকা জোগানোর যথেষ্ট আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে ওই ব্যক্তির। আদালতে বিষয়টি তুলে ধরেন ওই তরুণীর আইনজীবী। এতে বিচারপতিরা জানান, আইনত ওই টাকা তরুণীর প্রাপ্য। আদালত বলে, "মেয়ে হিসেবে মা-বাবার থেকে পড়াশোনার খরচ আদায়ের অধিকার আইনত বৈধ এবং কার্যকর। কেউ সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারবেন না মেয়েদের। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া মেয়ের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। আয় অনুযায়ী যতটা সম্ভব, মা-বাবা সেই খরচ জোগাতে বাধ্য।"
আদালত আরও জানায়, ওই টাকা রেখে দিতে পারেন তরুণী। মা-বাবা কাউকে টাকা ফেরত দিতে হবে না তাঁকে। ওই টাকার উপর আইনি অধিকার রয়েছে তাঁর।
জানা গিয়েছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় মোট ৭৩ লক্ষ টাকায় মীমাংসা হয়। খোরপোষ বাবদ ওই টাকা স্ত্রীকে দেন ওই ব্যক্তি, যার মধ্যে মেয়ের পড়াশোনার জন্য বরাদ্দ করেন ৪৩ লক্ষ টাকা। প্রায় ২৬ বছর ধরে আলাদা থাকছিলেন ওই দম্পতি। তাই পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদ নয়, তাঁদের বিয়েই বাতিল করেছে আদালত। এ নিয়ে আর নতুন কোনও মামলাও করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। কোনও পক্ষ আর কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জানাতে পারবেন না বলে জানিয়েছে আদালত।