'পুলিশ পুলিশ করে ডাকছিলাম। কোনও নিরাপত্তা ছিল না। সাংসদরাই ওদের ঢুকতে ছুটে গেলাম'...তখনও ঘটনার ঘোর কাটাতে পারছেন না কাকলি ঘোষ দস্তিদার। গলায় স্পষ্ট আতঙ্ক। ভাবছিলেন, যদি বিষাক্ত গ্যাস হয়ে থাকে। আতঙ্কের থেকেও স্পষ্ট ক্ষোভ। কোথায় নিরাপত্তা? কেন্দ্রর উদ্দেশে আক্রমণ শানিয়ে প্রশ্ন তুললেন তিনি।
সংসদ হামলার ২২ বছর পূর্তির দিনই লোকসভায় ফের আতঙ্ক ছড়াল। দর্শক গ্যালারি থেকে হঠাৎ লাফ দিল ২ জন। সবাই হতবাক ! হঠাৎ সাংসদদের লক্ষ্য করে স্প্রে! বেরিয়ে আসতে থাকল রঙিন ধোঁয়া। কারা এরা ? বিষাক্ত ধোঁয়া ? মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ল আতঙ্ক। সংসদে হুলস্থল। ধৃত ২ সন্দেহভাজন। জুতোর মধ্যে লোকানো ছিল স্মোকিং ক্যান। সেখান থেকেই বের হতে শুরু করল রঙিন ধোঁয়া। এরপরই ফের বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ল সংসদের নিরাপত্তা। এরপর ২ জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
ঘটনার পরই এবিপি আনন্দকে প্রথম প্রতিক্রিয়া দেন সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। বলেন, 'রীতিমতো নিরাপত্তার গা-ফিলতি। ওরা স্লোগান দিচ্ছিল। কিন্তু কী বলছিল আমরা শুনতে পাইনি...দেখলাম হলুদ রঙের গ্যাস। তাই বিষাক্ত হলেও হতে পারে। পরীক্ষা না হলে তো বলতে পারব না। ' বারবার তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ। 'লোকসভার ভিতরে যেভাবে ওরা গ্যাস ছড়িয়ে দিল...তখন হাউজ ভর্তি এমপি। আমি তো সিকিউরিটি , পুলিশ ইত্যাদি বলে চিৎকার করি। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। লোকসভার নিরাপত্তা কোথায়, সারা দেশের নিরাপত্তা কাদের হাতে ?'
ঘটনার পর লোকসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। বের করে নিয়ে যাওয়া হয় সংসদদের। তারপর তৃণমূল সাংসদরা যান পার্টি অফিসে। সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশের সাংসদের পাস নিয়ে ঢুকেছিল সাগর ও মনোরঞ্জন নামে দুই ব্যক্তি। সংসদের বাইরে পরিবহণ ভবন চত্বর থেকেও পাকড়াও করা হয় আরও ২ জনকে। ধৃতদের নাম অমল ও নীলম।
অন্যদিকে, মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষও বলেন, যেখানে ফোন পর্যন্ত নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয় না, সেখানে এই রকম সামগ্রী নিয়ে কারা ভিতরে ঢুকে পড়ল তা খতিয়ে দেখা দরকার। মেটাল ডিটেক্টর বা অন্যান্য সিকিউরিটি চেকে যেন এই জাতীয় সামগ্রীও ধরা পড়ে, তা দেখতে হবে ভবিষ্যতে, মত দিলীপের।
আরও পড়ুন :
গ্যালারি থেকে আচমকা লাফ, নিরাপত্তার বেড়া ডিঙিয়ে স্প্রে বিশেষ গ্যাসও, অধিবেশন চলাকালীনই লোকসভায় হুলস্থুল কাণ্ড