মঙ্গলবারই কেঁপে উঠেছিল মায়ানমার। ভয়াবহ ধাক্কায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল ভারতেও। কেঁপে উঠেছিল এ-দেশের দক্ষিণপূর্বের বড় এলাকা। এদিনই আবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ফিলিপিন্স। শক্তিশালী ধাক্কায় তছনছ হল সে-দেশের মধ্যভাগের বড় এলাকা।
এদিন ফিলিপিন্সের শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। DZMM radio সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ফিলিপিন্সের মধ্যাঞ্চলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৯। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে যে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল বোগো থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার (১০ মাইল) উত্তর-পূর্বে। সেখানে প্রায় ৯০ হাজার মানুষের বাস। উপকূলীয় শহরে কম্পনের ধাক্কায় ধসে পড়ে একের পর এক বাড়ি। চিড় ধরে বহুতলেও। চাপা পড়ে মারা যান অনেকে। বহু জন এতটাই আতঙ্কিত যে ঘরে ফিরতে চাইছেন না। রাতভর খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বোগো। সেখানেই অন্তত ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। যদিও এখানেই যে মৃত্যুমিছিল থামবে না, সেই আশঙ্কার কথা আগেই জানিয়েছে প্রশাসন। উদ্ধারকারীদের আশঙ্কা , উদ্ধার অভিযানে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। একটি পাহাড়ি গ্রামে ভূমিকম্পের ফলে বসে যায় মাটি। বহু ঝুপড়ি মাটিচাপা পড়ে। উদ্ধারকর্মীরাও যথেষ্ট বিপদ মাথায় নিয়েই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
জোরকদমে উদ্ধারকাজ করছে পুলিশ। উদ্ধার অভিযানে নেমেছে সেনা । বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। স্নিফার ডগের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, জানাচ্ছে স্থানীয় সূত্র। ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়েছে রাস্তাঘাটের। ভেঙে পড়েছে সেতু। তাই ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় পৌঁছানোটাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে চলছে তুমুল বৃষ্টির। ফলে পরিস্থিতি কঠিন।
ফিলিপিন্স প্রশান্ত মহাসাগরীয় "রিং অফ ফায়ার"-এ অবস্থিত। এই অঞ্চল খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ। এখানে মাঝে মধ্যেই ভূমিকম্পের ধাক্কা আসে। অনেক ভূমিকম্পই এতটাই দুর্বল যে মানুষ তা অনুভব করতে পারে না, কিন্তু যখন শক্তিশালী ভূমিকম্প আসে, তখন তার পূর্বাভাস দেওয়ার মতো কোনও প্রযুক্তি নেই।
বিপজ্জনক ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা । বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় চলাচল করা কঠিন । পাথর ও মাটির নিচে আটকে পড়াদের বের করে আনতে উন্নতমানের ভারী যন্ত্রপাতির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।