নয়াদিল্লি: মণিপুরের (Manipur Violence) ঘটনায় মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) । আজ বাদল অধিবেশন (Monsoon Budget Session) শুরুর আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মণিপুর হিংসার ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন মোদি। মণিপুরের ঘটনায় সারা দেশবাসী লজ্জিত। 'মণিপুরে যা হচ্ছে তার জন্য আমি ব্যথিত। আমার হৃদয় ভারাক্রান্ত।' মণিপুরের মেয়েদের সঙ্গে যা হচ্ছে তা কখনও মাফ করা হবে না। কড়া আইনি পদক্ষেপের আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর।
কী বলেছেন প্রধানমন্ত্রী:
মণিপুরের ঘটনা নিয়ে এই প্রথমবার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন তিনি, বললেন, 'এই গণতন্ত্রের মন্দিরের পাশে যখন দাঁড়িয়ে আছি, তখন আমার হৃদয় ক্ষোভ এবং দুঃখে পূর্ণ রয়েছে। মণিপুরের যে ঘটনা সামনে এসেছে, যে কোনও সভ্য সমাজের পক্ষে লজ্জার। যারা এসব করছেন তাদের জন্য পুরো দেশকে লজ্জিত হতে হচ্ছে। আমি সব মুখ্যমন্ত্রীদের অনুরোধ করছি, তাঁরা যেন নিজেদের রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা আরও কঠোর করেন। বিশেষ করে নারীদের সম্মান রক্ষার বিষয়ে যেন কঠোর হন।' গোটা ঘটনায় কড়া শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আশ্বাস দিচ্ছি, কাউকে রেয়াত করা হবে না। আইনি পথে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। মণিপুরের কন্যাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা কখনও মাফ করা হবে না।'
যদিও সংসদের বাইরে নয়, সংসদের ভিতরে মণিপুর কাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছে বিরোধী জোট। আজ সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। মণিপুরে গত ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে যেভাবে হিংসার ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে প্রথম থেকেই মণিপুরের বিজেপি সরকার এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। ফলে এদিন অধিবেশনের শুরুতেই মণিপুর নিয়ে সংসদের আবহাওয়া তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জবাব চাইতে পারেন বিরোধীরা। আগেই অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি সব ইস্যুই উঠবে সংসদে। অধিবেশনের শুরুতে সংসদের দুই কক্ষে মণিপুর ইস্যুতে আলোচনার প্রস্তাব জমা দিয়েছে কংগ্রেস। গতকালই সরকার সব বিষয়ে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সর্বদল বৈঠকে।
মণিপুরকাণ্ড নিয়ে বিজেপি সরকারকে তুলোধনা করেছে কংগ্রেসের। 'এই ঘটনায় মন্ত্রীর মেয়ে আক্রান্ত হলে কী করতেন? শুধু ট্যুইট করে দায় সারছেন স্মৃতি ইরানি!' সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপিকে তোপ মহিলা কংগ্রেস নেত্রী নেত্তা ডিসুজার।
এরই মধ্যে মণিপুরে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম পাঠিয়েছে তৃণমূল। দোলা সেন, ডেরেক ও ব্রায়েন, সুস্মিতা দেব-সহ মোট পাঁচ সাংসদ গিয়েছেন মণিপুরে। এর আগে রাহুল গাঁধীও গিয়েছিলে মণিপুরে। সেখানে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সড়কপথে যেতে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরে কপ্টারে ঘরছাড়াদের শিবিরে যান তিনি। মণিপুরের হিংসার ঘটনার শুরু থেকেই বারবার প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছে কংগ্রেস। মণিপুরে হিংসার বাড়বাড়ন্তের ঘটনায় আদতে মণিপুরের বিজেপির সরকারের অপদার্থতাকেই নিশানা করেছে হাত শিবির। একই সুরে বিজেপিকে আক্রমণ করেছে বাকি বিরোধীরাও।
আরও পড়ুন: জ্বলছে মণিপুর! মর্গে মৃতের স্তূপ! শাহকে কেন চিঠি মহিলা সংগঠনের?