নয়াদিল্লি: যুদ্ধঘোষণার প্রায় পর পরই ইজরায়েলকে সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন। হামাসের রকেট ছোড়ার সিদ্ধান্তকে সন্ত্রাস হামলা বলে উল্লেখ করেছিলেন। সেই নিয়ে কম তর্ক-বিতর্ক হয়নি। এবার প্যালেস্তিনীয় কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গাজার আল-আহলি হাসপাতালে বিস্ফোরণে ৫০০ মানুষের প্রাণ যাওয়ায় সমবেদনা জানালেন। (Israel Palestine War)
বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মাহমুদের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান মোদি। তিনি লেখেন, 'প্যালেস্তিনীয় কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে কথা হল। গাজার আল আহলি হাসপাতালে নাগরিকদের মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়েছি। প্যালেস্তিনীয়দের মানবিক সহযোগিতা জুগিয়ে যাব আমরা। ওই অঞ্চলে যে সন্ত্রাসী, হিংসাত্মক কার্যকলাপ চলছে এবং তাতে নিরাপত্তা যেভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। একই সঙ্গে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাত নিয়ে ভারতের নীতিগত অবস্থান সম্পর্কে আবারও আশ্বাস দিয়েছি'। (Israel Palestine Conflict)
গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে হামাস প্রথম ইজরায়েলে রকেট ছোড়ে। তার পরই যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয় ইজরায়েল। তার পর একটানা ১৩ দিন ধরে বোমা-রকেট বর্ষণ অব্যাহত থেকেছে। তাতে প্রাণ গিয়েছে কয়েক হাজার মানুষের। মঙ্গলবার রাতে গাজার আল আহলি হাসপাতালে বিস্ফোরণ ঘটে ৫০০ জন মারা যান। মৃতদের মধ্যে শিশু এবং মহিলার সংখ্যাই ছিল বেশি।
নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো দেশ যেখানে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়ায়, সেখানে ইরান, লেবানন এবং সিরিয়া আবার প্যালেস্তাইনের পক্ষ নেয়। উল্লেখযোগ্য ভাবে মোদি ইজরায়েলকে সমর্থনের কথা জানান। ফোনে কথা বলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহুর সঙ্গে। সেই নিয়ে বিতর্ক বাধতে সময় লাগেনি। কারণ ঘোষিত ভাবে ভারত বরাবরই প্যালেস্তাইনের প্রতি সমব্যথী ছিল।
তাই মোদি ইজরায়েলকে সমর্থনের কথা জানাতেই তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। অটলবিহারি বাজপেয়ী যেখানে স্বাধীন এবং পৃথক প্যালেস্তাইনের পক্ষে ছিলেন, ইজরায়েলকে আক্রমণকারী বলে উল্লেখ করেছিলেন, সেখানে মোদির এই অবস্থান আরব দুনিয়ার সঙ্গে ভারতের সমীকরণ পাল্টে দেবে কিনা, শুরু হয় জল্পনা। এর পর বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, হামাসের কার্যকলাপকে সন্ত্রাসী কাজকর্মের সঙ্গে তুলনা করলেও, ভারত স্বাধীন প্যালেস্তাইনের পক্ষেই।
সেই আবহেই মঙ্গলবার গাজার হাসপাতালে বিস্ফোরণ ঘটে ৫০০ জনের মৃত্যু হয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, যুদ্ধকালেও হাসপাতালে কোনও রকম দাগ কাটা যায় না। তাই এই ঘটনায় কার্যত ফুঁসে ওঠে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ গাজার সাধারণ নাগরিক এবং একাধিক হাসপাতালকে আগেই জায়গা খালি করে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল ইজরায়েল। তাই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে তারা। ইজরায়েল যদিও হামাসের মতো গাজার আর একটি সশস্ত্র সংগঠনকে হামলার জন্য দায়ী করে। প্যালেস্তিনীয়দের দাবি, রাতের অন্ধকারে ইজরায়েলই রকেট ছুড়েছে। জার্মানি-সহ একাধিক দেশ হাসপাতালে বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা করেছে। দোষীদের কড়া শাস্তির পক্ষে সওয়াল করেছে। সেই আবহেই প্যালেস্তিনীয় কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বললেন মোদি।