নয়াদিল্লি : বিশ্বজুড়ে মাথাচাড়া দিচ্ছে নানা ইস্যু । বিভিন্ন দেশের মধ্যে সমীকরণের ছবিটাও পাল্টাচ্ছে কোনও কোনও ক্ষেত্রে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চিন সফর করতে চলেছেন। গালওয়ান সংঘর্ষের পর যা প্রথম সফর হতে চলেছে। এমনই খবর সামনে আসছে। Shanghai Cooperation Organisation summit বা SCO সম্মেলনে যোগ দিতে চলেছেন তিনি।

২০১৯ সালে শেষবার চিন সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উভয় দেশের সম্পর্কের চরম অবনতি হয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উত্তেজনার সেই আবহ আপাতত কমলেও, দুই দেশের সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য কোনও উন্নতি হয়নি। এরকম একটা পরিস্থিতিতে মোদি চিন সফরে যাচ্ছেন। আগামী ৩১ অগাস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিনের তিয়ানজিন শহরে বসতে চলেছে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলন। সেখানে SCO সদস্যভুক্ত দেশগুলি আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাস এবং বাণিজ্যের মতো বিষয়গুলি আলোচনা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত ও চিনের সম্পর্কে স্থিতিশীলতা আনার জন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। 

প্রসঙ্গত, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে অশান্তি বাড়তে বাড়তে ২০২০ সালের জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে চিনা বাহিনীর। গোলাগুলি না চললেও, সংঘর্ষ চলাকালীন চিনা সেনা বিশেষভাবে তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করে বলে জানা যায়। ওই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল। পরে তাদের পাঁচ জওয়ানের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে চিনও। গালওয়ান সংঘর্ষের জেরেই ভারত-চিনের বোঝাপড়া তলানিতে এসে ঠেকে। এরপরও লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশ, লাগাতার চিনা আগ্রাসনের খবর সামনে এসেছে সাম্প্রতিককালে। সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে সম্প্রতি মুখ খোলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ‘অস্বাভাবিক’ হারে সেনা মোতায়েন করার কথা জানান তিনি। যদিও এসবের মধ্যে ২০২৪ সালে অক্টোবর মাসে, কাজানে BRICS সম্মেলনে সাক্ষাৎ হয় মোদি-জিনপিংয়ের।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়ায়, সাময়িক সংঘর্ষের ঘটনার সময়ও যে দুই দেশ পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকেছিল, তার একটি চিন। পাকিস্তান চিনের তৈরি যুদ্ধ-সামগ্রী ব্যবহার করে বলে অভিযোগ ওঠে। ভারতের 'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে চিনের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, 'আজ ভোরে ভারত যে সেনা অভিযান চালিয়েছে, তা দুঃখজনক। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা। ভারত এবং পাকিস্তান চিরকাল পরস্পরের প্রতিবেশী হিসেবেই বিরাজ করবে। তারা চিনেরও প্রতিবেশী। চিন সব রকমের সন্ত্রাসের বিরোধী। দু'পক্ষের কাছেই আবেদন, বৃহত্তর স্বার্থে, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সংযত থাকুন, এমন কিছু করবেন না, যাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।' এরকম একটা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর চিন সফর।