ইম্ফল : হিংসা-বিধ্বস্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্য। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য তিনি নিজে না যাওয়ায় বারবার তাঁকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে বিরোধীরা। দুই বছরের বেশি সময় ধরে মণিপুরে অশান্তির বাতাবরণ থাকলেও একবারও যাননি প্রধানমন্ত্রী। এবার অবশ্য মণিপুর সফর করতে চলেছেন মোদি। আগামীকালই তিনি যাচ্ছেন উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। ২০২৩ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে এই রাজ্যে। যাতে ২০০-র বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। 

Continues below advertisement

মণিপুরের মুখ্যসচিব পুনীত কুমার গোয়েল জানিয়েছেন, ১৩ সেপ্টেম্বর সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী। মিজোরাম থেকে প্রথমে চূড়াচাঁদপুরে নামবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি ইম্ফল যাবেন। সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব বলেন, "মণিপুরের অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং সামগ্রিক উন্নয়নের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী চূড়াচাঁদপুরে ৭,৩০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর এই সফর মণিপুরে শান্তি, স্বাভাবিকতা ও বৃদ্ধি নিয়ে আসবে।" প্রধানমন্ত্রী চূড়াচাঁদপুরে ৭,৩০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন, এই এলাকা জাতিগত হিংসায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলির মধ্যে একটি। তাঁর সফরের মাত্র দুই দিন আগে বৃহস্পতিবারও এই শহরে নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যেখানে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত করা সাজসজ্জা নষ্ট ও ভাঙচুর করেছে। 

 

Continues below advertisement

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের পর, প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলে ১,২০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের প্রকল্প উদ্বোধন করার আগে একটি জনসমাবেশে ভাষণ দেবেন। মণিপুর ছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ এবং নির্বাচনমুখী বিহার যাওয়ার আগে মিজোরাম এবং অসম সহ অন্যান্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতেও সফর করবেন। আগামীকাল, তিনি মিজোরামে তাঁর সফর শুরু করবেন, যেখানে তিনি আইজলে ৯,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং উদ্বোধন করবেন। এরপর, তিনি মণিপুর যাবেন।

শেষবার ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মাটিতে পা রেখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর ২০২৩ সালের মে মাসে ভয়াবহ হিংসার আগুনে জ্বলে ওঠে উত্তর পূর্বের রাজ্য মণিপুর। শতাধিক মৃত্যুর খবর উঠে আসে। বারবার বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। প্রশ্ন ওঠে, কবে মণিপুরে পা রাখবেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ?

মণিপুরের পাহাড়ি এলাকায় কুকি ও উপত্যকা জুড়ে মেইতেই, এই দুই গোষ্ঠীর সংঘাতে তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন বিজেপির এন বীরেন সিং। মণিপুরে শুরু হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। তারই মাঝে কিছুদিন আগেই মণিপুরে এক গুলি চালনা কাণ্ডে ৪ জনের মৃত্যু হয়।

এই ইস্যুতে গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চরম আক্রমণ শানিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৪২টি দেশ সফর করেছেন, কিন্তু মণিপুর সফরের জন্য তাঁর কাছে সময় নেই, যেখানে মানুষ মারা যাচ্ছে।